রাজনৈতিক সহিংসতা এবং অস্থিরতায় দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও যে কোনো পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো শক্তি বাংলাদেশের মানুষের আছে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান।
Published : 25 Jan 2015, 02:26 PM
দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে চলমান লাগাতার অবরোধ ও বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্নস্থানে ডাকা হরতালের নেতিবাচক প্রভাবের প্রেক্ষাপটে রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আশঙ্কার পাশাপাশি আশার কথাও শোনান গভর্নর।
আতিউর বলেন, “গত বছর আর্থিক খাতের বেশির ভাগ সূচকের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।তবে হালের সহিংসতা ও অস্থিরতা এ ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
“যখনই বিনিয়োগে চাঙ্গাভাব, আমদানি-রপ্তানি ও রেমিটেন্সে ঊর্ধ্বমুখী জোরালো ধারা, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে নতুন রেকর্ড এবং মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা দেখা গেল- ঠিক তখনই শুরু হলো এই অস্থিরতা।”
তবে প্রতিকূলতা ও যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাকে বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় শক্তি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “জাতি হিসেবে এটিই আমাদের বড় শক্তি। এর প্রমাণ আমরা অতীতে বার বার পেয়েছি।”
২০১৩ সালের সহিংসতা এবং অস্থির রাজনীতির কথা স্মরণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান বলেন, “বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি, বিশ্বব্যাপী উৎকণ্ঠা এবং নেতিবাচক মন্তব্যের পরও গত অর্থবছর বাংলাদেশে ৬ দশমিক ১২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
“কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব এই রেজিলিয়েন্ট ও দেশপ্রেমিক জনগণের পাশে থাকা। বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সাময়িক ক্ষয়-ক্ষতি যাতে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করতে পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা।”
লিখিত বক্তব্যে গভর্নর ‘অভ্যাসগত ঋণ খেলাপিরা’ যাতে কোনো ধরনের ছাড় না পায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আর্থিক খাতে কিছু অস্বস্তিকর দিকও আছে। তার মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য খেলাপি ঋণ, বিনিয়োগে মন্থর গতি ও ব্যাংকের শাখা পর্যায়ের অনিয়ম।”
২০১৩ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিশ্বমানের শ্রেণীবিন্যাস ও প্রভিশনিং নিয়ম চালুর কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে ঋণ আদায়ে আরো মনোযোগী হতে ক্রমাগত নির্দেশ দেওয়া এবং সময়োপযোগী নীতি গ্রহণের কারণে খেলাপি ঋণের হার কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন আতিউর।
“মন্দ গ্রাহকদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে আমরা দ্বিধা করব না। এজন্যে ব্যাংকগুলোকে সর্বক্ষণ গুণমানের ঋণ দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে নজরদারি অব্যাহত রাখবেন।”
মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।