মহাজোট সরকারের শেষ বাজেটেও অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ থাকছে এবং এবার জমি ও বাড়ি কেনাও এর আওতায় এসেছে।
Published : 06 Jun 2013, 02:32 PM
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, আবাসন খাতে গত বছরের ‘বিপর্যয়’ মোকাবেলায় প্লট ও ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার এই ‘বিশেষ সুযোগ’ দেয়া হয়েছে।
আবাসনে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে মুহিত এই পরিকল্পনার কথা জানালেও নিজেই স্বীকার করেছেন, এর সুফল আগে পাওয়া যায়নি।
বর্তমান আইন অনুযায়ী, অপ্রদর্শিত আয়ে যে করহার প্রযোজ্য তার সঙ্গে ১০ শতাংশ অর্থ্যাৎ আয়ের আড়াই শতাংশ জরিমানা দিয়ে তা বিনিয়োগ বা বৈধ করা যায়।
এক্ষেত্রে টাকার কোনো উৎস জানা হবে না বলে অর্থ আইন-২০১৩ তে বলা হয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ (ই) ধারা সংশোধন করে এই সুযোগ দেয়া হয়েছে।
‘বিশেষ সুযোগ’ হিসেবে এবার এলাকাভেদে ফ্ল্যাট অথবা প্লট কিনতে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে।
এছাড়া আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের উৎসে কর কাটার হার কমানোর প্রস্তাবও করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জনবহুল এ দেশে সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার নিজস্ব উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
“বর্তমানে স্থবির আবাসন খাতে অধিকতর গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে ফ্ল্যাট/বাড়ি/জমি ক্রয় বা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট হারে কর প্রদান সাপেক্ষে বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানের প্রস্তাব করছি।”
তিন কাঠার বেশি জমি বা ফ্ল্যাট কেনা বা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ৭ হাজার টাকা কর দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকার ধানমন্ডি, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া, উত্তরা, বসুন্ধরা, ক্যান্টনমেন্ট, কারওয়ানবাজার, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা, নিকুঞ্জ, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, খুলশী, আগ্রাবাদ ও নাসিরাবাদ এলাকায় তিন কাঠা জমি-বাড়ি কিনতে হলে প্রতি বর্গমিটারের জন্য ৪ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আর তিন কাঠার বেশি কিনলে দিতে হবে ৫ হাজার টাকা করে কর।
অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় তিন কাঠার জন্য কর দিতে হবে ২ হাজার টাকা। তিন কাঠার বেশির জন্য দিতে হবে ৩ হাজার টাকা।
জেলা সদরের পৌরসভা এলাকায় তিন কাঠার জন্য কর দিতে হবে এক হাজার টাকা। তিন কাঠার বেশির জন্য দিতে হবে দেড় হাজার টাকা।
উপজেলাসহ অন্যান্য এলাকায় তিন কাঠার জন্য কর দিতে হবে ৭৫০ টাকা। তিন কাঠার বেশির জন্য দিতে হবে ১ হাজার টাকা।
একাধিক বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
জমি বা প্লট কেনার ক্ষেত্রে দামের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আর একাধিক জমি বা প্লট কিনতে ২০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত কর দিতে হবে।