ভুল ধারণায় সিটি করপোরেশনকে দায়ী করা হয়: নাছির

নগরবাসী ‘ভুল ধারণা থেকে’ সব ভোগান্তির জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়ী করে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2017, 03:19 PM
Updated : 18 August 2017, 03:21 PM

আইনে নির্ধারিত তিনটি সেবার বাইরে সিটি করপোরেশনের আর কোনো দায়িত্ব নেই বলেও তিনি দাবি করেছেন।

শুক্রবার চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় মেয়র বলেন, দেশের সব সিটি করপোরেশন নির্দিষ্ট আইন দিয়ে পরিচালিত হয়। সেই আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের কাজ মূলত তিনটি- রাস্তা ও নালা সংস্কার, আলোকায়ন এবং নগর পরিচ্ছন্ন রাখা।

“কিন্তু সিংহভাগ নগরবাসী ভুল ধারণা পোষণ করেন। তারা ভাবেন, সিটি এলাকার সামগ্রিক দিক দেখাশোনার দায়িত্ব শুধু সিটি করপোরেশনের। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, পরিবহন ও জলাবদ্ধতাসহ সবকিছুর জন্যই সরাসরি সিটি করপোরেশনকে দায়ী করেন তারা। কিন্তু সবগুলো বিষয় তত্ত্বাবধানের জন্য আলাদা আলাদা সংস্থা কাজ করে।”

চট্টগ্রাম নগরীতে চলমান বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি তুলে ধরে নাছির বলেন, “এসব কাজের জন্য অনুমতি চাইলে দিতে হয়। বিশেষ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ওই রাস্তা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু সব দোষ পড়ে সিটি করপোরেশনের ওপর।”

উদাহরণ হিসেবে মেয়র বহদ্দারহাট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কাজের কথা বলেন। ২০১০ সাল থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরুর কথা থাকলেও তা শুরু হয়েছে কয়েক মাস আগে।

উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির পেছনে নগরীর সড়কগুলো আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান বা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন নাছির।

“প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদন বা বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। বর্তমানে ওয়াসার তিনটি প্রকল্পের কাজ চলছে। এই তিনটি কাজ আলাদা ঠিকাদারের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। এতে তাদের সময়, সুযোগ কিংবা টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশন ভিন্ন।” 

এই বছরই জলাবদ্ধতা দেখতে হাঁটু জলে নামতে হয়েছিল আ জ ম নাছিরকে (ফাইল ছবি)

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব আয়োজিত ‘নান্দনিক চট্টগ্রামের নন্দিত নাগরিক’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় মেয়র নাছির ছিলেন প্রধান অতিথি।

বক্তৃতা দিতে এসে গত দুই বছরে নগরী থেকে বিলবোর্ড উচ্ছেদ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে ‘ডোর টু ডোর’ সার্ভিস চালুসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, “পর্যায়ক্রমে নগরীর সব কাঁচা-পাকা সড়কে কার্পেটিং হবে। ফুটপাতে জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করার জন্য হকারদের একটা শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসা হবে।”

এলইডি বাতির মাধ্যমে পুরো নগরীতে আলোকায়নের কাজ চলছে জানিয়ে মেয়র বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত নগরবাসীর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।”

নগরবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় দুঃখও প্রকাশ করেন মেয়র।

“সেবামূলক কাজ হচ্ছে একটা টিমওয়ার্ক। এ কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি নাগরিকদেরও একটি বড় দায়িত্ব রয়েছে সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের ক্ষেত্রে।

“এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত মাইকিংসহ লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নাগরিকদের সহায়তা কামনা করা হয়। কিন্তু সিটি করপোরেশন প্রত্যাশা অনুযায়ী সহযোগিতা পাচ্ছে না।”

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও রূপালী ব্যাংকের পরিচালক আবু সুফিয়ান, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুর ও যুগ্ম-সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বক্তব্য দেন ।

এছাড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, স্থায়ী সদস্য সমীর কান্তি বড়ুয়া, নুরুল আলম, নাজিমুদ্দিন শ্যামল, একরামুল হক বুলবুল, সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ ও মুস্তফা নঈমও আলোচনায় অংশ নেন।