চট্টগ্রামে ভারতীয় শিক্ষার্থী খুন নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ

চট্টগ্রামে ভারতীয় শিক্ষার্থী আতিফ শেখ খুনের ২৫ দিন পরও হত্যার কারণ বা জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2017, 03:35 PM
Updated : 7 August 2017, 03:35 PM

নিহতের দুই সহপাঠীকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও এ হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত ধোঁয়াশায় রয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ছুরি, রক্ত ও কাপড় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডির কাছে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন- ওই প্রতিবেদনগুলো হাতে পেলে তারা অনেক কিছু পরিষ্কার হতে পারবেন।

চট্টগ্রামের বেসরকারি ইউএসটিসির চিকিৎসা বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আতিফ শেখ খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হন তার দুই বন্ধু নিরাজ গুরু ও উইনসন সিং।

এ দুজনের মধ্যে নিরাজ ইতোমধ্যে আদালতে জবানবন্দি দিলেও উইনসন সিং কোনোভাবেই মুখ খুলছেন না বলে মামলাটির তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

উইনসন সিংকে দুই দফায় হেফাজতে (রিমান্ড) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার আদালতে পাঠানো হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রিমান্ডে উইনসনের কাছ থেকে কোন তথ্য আদায় করা সম্ভব হয়নি।

“সে হত্যাকাণ্ডের আগে-পরের সব ঘটনা পুলিশকে জানালেও হত্যাকাণ্ডের সময়ের কোন কিছুই মনে নেই বলে দাবি করছে।”

গত ১৪ জুলাই গভীর রাতে আতিফ শেখ ও উইলসন সিং নামে দুই ভারতীয় শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। তারা নগরীর আকবর শাহ থানার আব্দুল হামিদ সড়কের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন।

এদের মধ্যে আতিফ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন, আর উইলসন ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে ঘটনার পর সহপাঠীর বরাত দিয়ে জানায় পুলিশ।

ঘটনার পারিপাশ্বিকতা বিচার করে উইনসনকে এ হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন বলে ধারণা করছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা।

“উইনসনই আমাদের কাছে হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন। কিন্তু সে কিছুই মনে নেই বলে অজুহাত তৈরি করছে। মনে না থাকার বিষয়টি আদৌ সম্ভব কিনা তা যাচাই করতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা বোর্ড গঠন করে মতামত নেওয়ার জন্য আমরা আদালতে আবেদন করেছি।” 

আলোচিত এ হত্যার তিন দিন পর ১৮ জুলাই বিকালে আতিফ শেখের বাবা আব্দুল খালেক বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে সুনির্দিষ্ট কাউকে অভিযুক্ত করা না হলেও আটজনকে ‘সন্দেহের’ তালিকায় রাখা হয়।

খালেকের সন্দেহের তালিকায় থাকা সবাই ইউএসটিসির শিক্ষার্থী।

মামলার পর আতিফের স্বদেশি ও সহপাঠী নিরাজ গুরু এবং উইনসনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।  

হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার আতিফের অপর সহপাঠী নিরাজ গত ২৭ জুলাই মহানগর হাকিম মাসুদ পারভেজের আদালতে জবানবন্দি দেন।

এতে তিনি হত্যার বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং ঘটনার পর তিনি শুধু দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান বলে দাবি করেন।

ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা ছুরি, রক্ত ও কাপড় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা বলেন, “প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। ওই প্রতিবেদনগুলো হাতে পেলে আমরা অনেক কিছু পরিস্কার হতে পারবো।”