রোগী জিম্মি করে ধর্মঘট অত্যন্ত দুঃখজনক: মন্ত্রী

রোগীর স্বজনদের মারধরে চার সহকর্মীর শাস্তির প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কঠোর সমালোচনা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2017, 02:40 PM
Updated : 4 March 2017, 03:32 PM

রোগীদের জিম্মি করে যে কোনো ধরনের ধর্মঘট অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নবনির্মিত কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের ইন্টার্ন, যাদের জন্য আমি ভাতা বাড়িয়ে দিয়েছি। ১৫ হাজার টাকা করেছি।

“একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বগুড়ায় রোগীর স্বজনরা আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আশা করি তারা ভুল বুঝতে পারবে, এর পুনরাবৃত্তি হবে না।”

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর স্বজনকে মারধর ও কান ধরে উঠ-বস করানোর ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ওই ঘটনা তদন্তের ভিত্তিতে চার ইন্টার্ন চিকিৎসককে শাস্তি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের শাস্তির ঘোষণা আসার পর সরকারি এই হাসপাতাল থেকে চলে যান শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। তিনদিনেও কাজে ফেরেনি তারা। চার সহকর্মীর শাস্তি বাতিলসহ সাতটি দাবিতে শনিবার মানববন্ধন করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।  

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম (ফাইল ছবি)

তাদের অনুপস্থিতিতে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা সেবা দিয়ে আসছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “হাসপাতাল চালু আছে, ডাক্তার সাহেবরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।”

নাসিম বলেন “রোগীকে জিম্মি করে কেউ ধর্মঘট করুক সে ডাক্তার হোক, শ্রমিক হোক যে-ই হোক না কেন, এটা আমরা সমর্থন করি না।”

এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী স্পষ্ট কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, “সমস্যার সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ব্যবস্থা চলবে।”

এদিকে বগুড়া মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে শনিবার রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সিরাজগঞ্জের নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও কর্মবিরতিতে গেছেন।

চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ কোন পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “ভিসি নিয়োগ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। অনুমোদন পেলেই ভিসি নিয়োগ পাবেন এবং তিনি নিয়োগ পাওয়া মাত্রই অন্য সব কাজ শুরু হবে।”

এর আগে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারটি উদ্বোধন করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভারতীয় সংস্থার সাথে যৌথভাবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার করা হয়েছে।

“এই সেন্টারে শুধু চট্টগ্রামের নয়, চট্টগ্রামের আশপাশের এলাকার মানুষেরও উপকার হবে। দরিদ্র রোগীরা স্বল্প মূল্যে সেবা পাবে।”

রাজশাহীতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়ে রোগীরা

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে নগরীর কোতোয়ালি আসনের সাংসদ জিয়াউদ্দিন বাবলু, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন এবং বাংলাদেশে মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ শফিউল আজম উপস্থিত ছিলেন।

চমেক হাসপাতাল ভবনের নিচতলায় কিডনি ডায়ালাইসিসের এই আলাদা বিভাগে আছে ৩১টি ডায়ালাইসিস মেশিন। এখানে প্রতিদিন তিন শিফটে মোট ৯৩ জন রোগী ডায়ালাইসিস সেবা নিতে পারবেন। দুই হাজার একশ নব্বই টাকায় একবার ডায়ালাইসিস করানো যাবে।

হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের অধীনে বর্তমানে ১১টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে নয়টি চালু আছে। এতে দৈনিক ১৮ জন রোগী সেবা পান।

ঢাকা ও চট্টগ্রামে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের জন্য ২০১৫ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ভারতের স্যান্ড মেডিকেইডস প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

দুই মাস আগে ঢাকার কিডনি ইন্সস্টিটিউটে ৩০টি ডায়ালাইসিস মেশিন নিয়ে সেখানকার সেন্টারটি কাজ শুরু করে। সেখানে

পর্যায়ক্রমে মোট ৭০টি মেশিন স্থাপন করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।