বগুড়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘটে, মানববন্ধন

চার ইন্টার্ন চিকিৎসককে শাস্তি দেওয়ার তিন দিন পরও বগুড়ায় অন্য ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে ফেরেননি; উল্টো ধর্মঘট ঘোষণা করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2017, 09:19 AM
Updated : 4 March 2017, 09:45 AM

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মুখপাত্র শাস্তি পাওয়া কুতুবউদ্দিন বলেন, শাস্তি প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবিতে তারা ধর্মঘটে রয়েছেন।

শনিবার বেলা ১১টায় হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার সময় তিনি এ ঘোষণা দেন।

সিরাজগঞ্জ সদর থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আলাউদ্দিন সরকার নামে এক রোগীর ছেলে ও দুই মেয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হন।

ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর ২ ফেব্রুয়ারি চার ইন্টার্ন চিকিৎসককে শাস্তির ঘোষণা আসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে।

শাস্তি হিসেবে চারজনের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্তগিত করা হয়। ছয় মাস পরে তাদের চারজনকে অন্য চারটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন করতে বলা হয়।

এর পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অঘোষিত কর্মবিরতি পালন করছিলেন। শনিবার মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে ঘোষণা দিলেন।

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুনকে খুলনা মেডিকেল, নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজকে দিনাজপুর মেডিকেল, মো. আশিকুজ্জামান আসিফকে ফরিদপুর মেডিকেল ও কুতুবউদ্দিনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে।

ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করলে তাদের সনদ বাতিল করা হবে বলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

মুখপাত্র কুতুব বলেন, শাস্তি প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবি না মানলে ধর্মঘট চলতে থাকবে।

তাদের অন্য ছয়টি দাবি হল - চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বিধান, ‘রোগীর লোক যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ’, হাসপাতালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অতিরিক্ত আনসার সদস্য মোতায়েন, হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে একজন এসআই নিয়োগ, প্রয়োজনের সময় কর্তৃপক্ষকে নিজ উদ্যোগে মামলা দায়ের করতে হবে।

ধর্মঘটে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা সচল রাখতে কর্তৃপক্ষ জরুরি সভা করেছে শনিবার সকাল ৯টায় পরিচালকের কার্যালয়ে।

পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মাসুদ আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা  কাজে যোগ দেননি।

“সভায় হাসপাতালের রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাসেবায় কোনো ঘাটতি হচ্ছে কিনা দেখার জন্য দুটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।”

হাসপাতালে ২০০ জনের মতো চিকিৎসক রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসাসেবায় কোনো সমস্যা হবে না।

সরজমিনে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ, সার্জারি, গাইনিসহ অন্যান্য বিভাগে যথারীতি চিকিৎসা কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মূল ফটকের রাস্তা জুড়ে থাকায় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।

নাম না জানিয়ে কয়েকজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, চিকিৎসা ব্যবস্থা যথাযথ এবং সঠিকভাবে চলছে। কোনো সমস্যা হচ্ছেনা। তবে সবাইকে অতিরিক্ত সময় দিতে হচ্ছে।