আইরিশদেরও উড়িয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা

হাশিম আমলার ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে চারশর বেশি রান তুলে আরেকটি অনায়াস জয় পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিটরা এবার গুঁড়িয়ে দিল আয়ারল্যান্ডকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2015, 03:34 AM
Updated : 3 March 2015, 02:42 PM

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের ২০১ রানের জয়ে শতক পেয়েছেন ফাফ দু প্লেসিও।

মঙ্গলবার ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আমলা আর দু প্লেসির প্রায় আড়াইশ’ রানের জুটি দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয়। শেষ দিকে রিলি রুশো আর ডেভিড মিলারের তাণ্ডবে প্রোটিয়ারা ৪ উইকেটে তোলে ৪১১ রান, যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

কাইল অ্যাবট ও ডেল স্টেইনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরুতেই পেছনের পায়ে চলে যায় আয়ারল্যান্ড। ৪৫ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ২১০ রানে তুলতে পারে তারা। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার টানা দুই ম্যাচে দুইশ’ রানের ব্যবধানে জয় ঠেকানো যায়নি।

মঙ্গলবার ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ৪১১ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্টেইন ও অ্যাবটের তোপে প্রথম পাঁচ ওভারেই বিদায় নেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। এই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে জেতা দেশটি।

দলের সংগ্রহ পঞ্চাশ পার হওয়ার আগেই অর্ধেক উইকেট হারিয়ে ফেলে আয়ারল্যান্ড। ৪৮ রানে ৫ উইকেট হারানো সহযোগী দেশটি দুইশ’ রান পার হয় বালবারনি ও কেভিনের দৃঢ়তায়।

ষষ্ঠ উইকেটে কেভিনের সঙ্গে ৮১ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান বালবারনি (৫৮)। অর্ধশতকের কাছাকাছি যাওয়া কেভিনকে বিদায় করেন দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার অ্যাবট। ২১ রানে ৪ উইকেট নেন এই পেসার।

বড় সংগ্রহ গড়তে এবার আর তেমন কিছু করতে হয়নি এবি ডি ভিলিয়ার্সকে। নিজের ইনিংস এবার বেশি বড় করতে পারেননি তিনি। অবশ্য ভালো ভিত পেয়ে ঝড়ের গতিতেই শুরু করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক।

অ্যান্ডি ম্যাকব্রায়ানের বলে রিভার্স সুইপ করে নায়াল ও’ব্রায়ানকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ৯ বলে ২৪ রানের ইনিংসটি।

এই বিশ্বকাপের আগে চারশ’ রানের বড় স্কোর ছিল একটিই। ২০০৭ এর আসরে বারমুডার বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৪১৩ রান করেছিল ভারত। এবার টানা দুই ম্যাচে চারশ’ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। 

প্রথম দল হিসেবে টানা দুই ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার চারশ’ রানের সংগ্রহ গড়ায় সবচেয়ে বড় অবদান আমলা ও দু প্লেসির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৫ উইকেটে ৪০৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করানোর পথেও ভালো অবদান রেখেছিলেন এই দুই জন। সেই ম্যাচে ১২৭ রানের জুটি উপহার দিয়েছিলেন এই তারা।

এবার দ্বিতীয় উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ ২৪৭ রানের জুটি উপহার দেন আমলা ও দু প্লেসি। ৩৬.১ ওভার স্থায়ী জুটি গড়ার পথে শতকে পৌঁছান দুই ব্যাটসম্যানই। 

চতুর্থ ওয়ানডে শতকে পৌঁছানোর পরপরই বিদায় নেন দু প্লেসি। ১০৯ বলে খেলা তার ১০৯ রানের চমৎকার ইনিংসটি গড়া ১০টি চার ও ১টি ছক্কায়।

মাত্র ১০ রানে এড জয়েসের হাতে জীবন পান আমলা। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি সবচেয়ে কম ইনিংসে ২০তম শতকে পৌঁছানোর কৃতিত্ব দেখানো এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। 

১২৮ বলে খেলা আমলার ক্যারিয়ার সেরা ১৫৯ রানের ইনিংসটি ১৬টি চার ও ৪টি ছক্কা সমৃদ্ধ। তার আগের সেরা ছিল অপরাজিত ১৫৩ রান। ৫২ বলে অর্ধশতকে পৌঁছানো আমলা নিজের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান ১০০ বলে।

আয়ারল্যান্ডের সেরা বোলার ম্যাকব্রায়ান তিন বলের মধ্যে ম্যাচ সেরা আমলা, ডি ভিলিয়ার্সকে ফিরিয়ে দিলেও বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিটদের রানের গতিতে ভাটা পড়েনি।

অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৫১ বলে ১১০ রানের জুটি গড়ে দলকে বিশাল সংগ্রহ এনে দেন রিলি রুশো ও ডেভিড মিলার। রুশো ৬১ ও মিলার ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তাদের জুটির ৭০ রানই আসে চার-ছক্কা থেকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৪১১/৪ (আমলা ১৫৯, ডি কক ১, দু প্লেসি ১০৯, ডি ভিলিয়ার্স ২৪, মিলার ৪৬*, রুশো ৬১*; ম্যাকব্রিন ২/৬৩, মুনি ১/৫২, কেভিন ১/৯৫)

আয়ারল্যান্ড: ৪৫ ওভারে ২১০ (পোর্টারফিল্ড ১২, স্টার্লিং ৯, জয়েস ০, নায়াল ১৪, বালবারনি ৫৮, উইলসন ০, কেভিন ৪৮, মুনি ৯, ডকরেল ২৫, সরেনসেন ২২, ম্যাকব্রায়ান ২*; অ্যাবট ৪/২১, মরকেল ৩/৩৪, স্টেইন ২/৩৯, ডি ভিলিয়ার্স ১/৭)

ম্যাচ সেরা: হাশিম আমলা।