মাশরফি বিন মুর্তজার সংবাদ সম্মেলনেও উঠল এই প্রশ্ন, সাকিব কোথায়? তবে সেই প্রশ্ন এদিনের অনুশীলন নিয়ে নয়। ম্যাচের আগের দিন বিশ্রাম সাকিবের নতুন কিছু নয়। আগেও নিয়েছন। তার অনুশীলনের ধরনটি বরারবরই আলাদা, নিজের ক্রিকেট নিজে খুব ভালো বোঝেন। আগের দিন বিশ্রাম নিয়ে ম্যাচে অসাধারণ পারফরম্যান্সের প্রমাণ রেখেছেন অনেকবারই।
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্ন ওই পারফরম্যন্স নিয়েই। সাকিব কোথায়, মানে সাকিবের মত সাকিব কোথায়?
রঙিন পোশাকে গত কিছুদিন ধরেই সাদামাটা সাকিব। বিশেষ করে বোলিংয়ে। ক্যারিয়ারে ভালো-খারাপ পারফরম্যান্স আর সবার মতো সাকিবেরও এসেছে। কিন্তু বোলিংটা টানা খারাপ করেছেন ক্যারিয়ারে কমই। গত কিছুদিনে সেটিই হচ্ছে ওয়ানডেতে। এ বছর ৮ ওয়ানডেতে ৪ উইকেট নিয়েছেন ৮১ গড়ে!
ব্যাটিং এতটা বিবর্ণ নয়। ৬ ইনিংসে ২ ফিফটি। তবে ২৯.১৬ গড়ে ১৭৫ রানও ঠিক সাকিবের মতো পারফরম্যান্স নয়।
যে কোনো আলোচনা বা আড্ডায় সাকিবের ক্রিকেটের প্রসঙ্গ উঠলেই একটি কথা সবসময়ই শুরুতে বলে নেন মাশরাফি। সাকিব মানে সাকিবই। বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার, দলের সম্পদ। সাকিবের প্রশংসা বা সমালোচনা, সবকিছুতেই আগে ব্যাপারটি মাথায় রাথতে হবে। সাকিবের বিকল্প কিছু ভাবাই মাশরাফির কাছে অবান্তর।
প্রশ্নটাও মাশরাফির ভাবনাকে মাথায় রেখেই। সাকিবকে মাপতে হবে তার উচ্চতা বিবেচনা করে। সেটিই বলছে, অন্তত বল হাতে সাকিব নেই ঠিক আপনায়। তার মানের সঙ্গেই মিলছে না পারফরম্যান্স।
সাকিব ভালো না করলে এমনিতেই বিপদে পড়ে যায় দল। আর এই ধরনের উইকেটে ভালো করতে ন পারলে তো দলের বিপদ বাড়ে আরও। দলের চ্যালেঞ্জ কঠিন, সাকিবের ওপর নির্ভরতাও যে বেশি!
এই বাস্তবতা অস্বীকার করছেন না মাশরাফি। তবে তার কাছে বরাবরই চেষ্টাই আসল। কে কতটা দিয়ে চেষ্টা করছে। সেই জায়গায় সাকিবের কোনো ঘাটতি দেখছেন না অধিনায়ক।
“বড় মঞ্চে এসে বড় ক্রিকেটাররা ফর্মে থাকা ভাগ্যের ব্যাপার। সাকিব সবসময়ই করে এসেছে তার কাজ। ও সেরাটাই চেষ্টা করছে। গত ম্যাচে শুরুতে বোলিং করেছে, সেরাটা দিয়েও পারেনি।”
পারা-না পারার ব্যপারটিও মাশরাফি ব্যাখ্যা করলেন ক্রিকেটীয় বাস্তবতায়। সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন অন্যদের করণীয়টাও।
“উইকেট একটা বড় ব্যাপার। অনেক সময় দেখা যায়, ও যেটা চাচ্ছে, সেটা হচ্ছে না। ও যদি খারাপ করে, আমাদের জন্য ওই টুর্নামেন্ট হয়ত কঠিন হবে। তবে সাকিব ফিরে আসবে কিনা বা টপ প্লেয়ার কিনা, এসব নিয়ে আমাদের সংশয় নাই।”
“ও যদি ওর লেভেলে খেলতে না পারে, তাহলে দলের অন্যদের অবদান বাড়াতে হবে। একটা দলে এসব হয়েই থাকে। টপ ক্রিকেটার সবসময়ই একই ফর্মে খেলে যাবে, এটা আশা করাও কঠিন।”
সবসময় একই পারফরম্যান্স যেমন আশা করা কঠিন, তেমনি এটাও সত্যি, আশাটাও থাকবে সঙ্গী। সাকিব পারলেই যে পেরে যায় বাংলাদেশ!