৫ বছর পর ফিরেই শতক শোয়েব মালিকের

৫ বছর পর টেস্ট দলে ফিরেই অপরাজিত শতক করেছেন শোয়েব মালিক। তবে ২ রানের জন্য শতক হাতছাড়া করেছেন মোহাম্মদ হাফিজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আবু ধাবি টেস্টের প্রথম দিনে পাকিস্তান করেছে ৪ উইকেটে ২৮৬ রান।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2015, 02:23 PM
Updated : 13 Oct 2015, 02:45 PM

বড় ইনিংস না খেললেও দিনের অন্যতম আলোচিত নাম ইউনুস খান। জাভেদ মিয়াঁদাদকে ছাড়িয়ে পাকিস্তানের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি।

ম্যাচ শুরুর আগেই পাকিস্তান বড় একটা ধাক্কা খায় ইয়াসির শাহকে হারিয়ে। চোটের কারণে একাদশে নেই সময়ের আলোচিত এই লেগ স্পিনার। স্কোয়াডে তৃতীয় স্পিনার না থাকায় একমাত্র স্পিনার জুলফিকার বাবরকে নিয়ে একাদশ সাজায় পাকিস্তান।

প্রথম দিনে অবশ্য পাকিস্তানের বোলারদের পরীক্ষা দিতে হয়নি। নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নেন মিসবাহ-উল-হক। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই পাকিস্তান হারায় ওপেনার শান মাসুদকে (২)। জেমস অ্যান্ডারসনের শর্ট বলে হকচকিয়ে যান মাসুদ, বাঁহাতি ওপেনারের হেলমেটে চুমু দিয়ে বল লাগে স্টাম্পে।

পরের সময়টুকু মোহাম্মদ হাফিজ ও শোয়েব মালিকের ব্যাটিংয়ের গল্প। ৭ রানে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান হাফিজ। এরপর প্রথম সেশনে তো বটেই, দ্বিতীয় সেশনটাও দুজন কাটিয়ে দিচ্ছিলেন নিরাপদে। চা-বিরতির ঠিক আগে হাফিজের বিদায়ে ভাঙে ১৬৮ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।

৯৮ রানে বেশ কিছুটা সময় থমকে থাকায় ছটফট করছিলেন হাফিজ। সেটারই খেসারত দিতে হয়েছে শতক হাতছাড়া করে। স্টোকসকে শাফল করে অনসাইডে খেলতে গিয়ে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। ক্যারিয়ারে এই নিয়ে তৃতীয়বার হাফিজ কাটা পড়লেন ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’-এ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৬ সালে আউট হয়েছিলেন ৯৫ করে। আর গত নভেম্বরে এই আবু ধাবিতেই করেছিলেন ৯৬।

মালিক অবশ্য হাফিজের মত ভুল করেননি। ২০১০ সালে সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই, এজবাস্টনে। এবারও শুরুতে টেস্ট স্কোয়াডে ছিলেন না। ওয়ানডেতে দারুণ পারফরম্যান্সে পরে দলের সঙ্গে যোগ করা হয় তাকে। তার পরও হয়ত একাদশে সুযোগ পেতেন না, যদি না পেটের পীড়ায় ছিটকে যেতেন আজহার আলী। সুযোগটা কী দারুণভাবেই না কাজে লাগালেন সাবেক অধিনায়ক!

ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিনে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। উইকেটে যেতে হয়েছিল তৃতীয় ওভারেই। দিন শেষে অপরাজিত তিনি ১২৪ রানে। ৩৩ টেস্টে মালিকের এটি মাত্র তৃতীয় শতক। সবশেষ শতক ছিল সেই ২০০৯ সালে!

ফেরাটাকে স্মরণীয় করা অবশ্য নতুন নয় মালিকের জন্য। গত মে মাসে ওয়ানডেতে ফিরেছিলেন ২ বছর পর। সেখানেও ফেরার ম্যাচে শতক করেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে এর মধ্যেই আবার জায়গা পাকা করেছেন দলে। টেস্টেও শতক করে পূর্ণতা পেল মালিকের ফেরা।

হাফিজের বিদায়ে চা-বিরতির পর উইকেটে আসেন ইউনুস। ১৫ রান থেকে মঈন আলিকে ছক্কা মেরে ছাড়িয়ে যান জাভেদ মিয়াঁদাদের (৮৮৩২ রান) রেকর্ড। সম্ভাবনাময় ইনিংসটা অপমৃত্যু হয়েছে অবশ্য ইউনুসেরই ভুলে। আউট হয়েছেন ব্রডকে তুলে মারতে গিয়ে (৩৮)।

পরে মিসবাহকে (৩) ফিরিয়ে অ্যান্ডারসন ছুঁয়েছেন আরেকটি মাইলফলক। টেস্ট উইকেট শিকারে ছাড়িয়ে গেছেন ওয়াসিম আকরামকে (৪১৪ উইকেট)। টেস্ট ইতিহাসের সফলতম ১০ বোলারের একজন এখন অ্যান্ডারসন (৪১৫)।

আসাদ শফিককে (১১) নিয়ে বাকি সময়টুতকু নিরাপদে কাটিয়ে দিয়েছেন মালিক।

২৯ রানে ২ উইকেটে নিয়ে ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার অ্যান্ডারসন। ব্রড ও স্টোকস নিয়েছেন একটি করে।

ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হয়েছে লেগ স্পিনার আদিল রশিদের। তবে প্রথম দিনটি কেটেছে তার হতাশায়, ১৭ ওভারে পাননি কোনো মেডেন, ৭৬ রান দিয়ে নেই উইকেটও।