পাইপ লাইনে গ্যাস বন্ধের পক্ষে বললেন শিল্পমন্ত্রী

যানবাহনের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার এবং গৃহস্থালির রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2015, 11:23 AM
Updated : 6 March 2015, 11:23 AM

শুক্রবার সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের হলরুমে চেম্বার নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেছেন, নতুন করে আর কোনো সিএনজি ফিলিং স্টেশনের অনুমতি না দিয়ে চালু স্টেশনগুলোও পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।

এ রকম একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছেও পাঠিয়েছেন বলে শিল্পমন্ত্রী ব্যবসায়ী নেতাদের জানান।

তিনি বলেন, “অপচয় রোধে সব ধরনের পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন। গ্যাসের অপচয়ের কারণে মজুদ কমে আসছে। বিদেশের মতো বাসা-বাড়িতে সিলিন্ডার দিয়ে গ্যাস ব্যবহার করলে অপচয় কমবে।”

আর যানবাহনে গ্যাস ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কোটি টাকা দিয়ে প্রাইভেট কার কিনে কম পয়সায় গ্যাস ব্যবহার করা যুক্তিসঙ্গত নয়। বাস মালিকরাও স্বল্পমূল্যে গ্যাস নেন, কিন্তু ভাড়া কমান না। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”

সরকারি তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে গ্যাসের স্বীকৃত মজুদের পরিমাণ আট দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ), যা দিয়ে বছর দশেক চলতে পারে। 

পেট্রোবাংলার হিসাবে, দেশে প্রতিদিনি প্রায় ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা সম্ভব হয় গড়ে ২৩০ থেকে ২৪০ কোটি ঘনফুট গ্যাস।

এর মধ্যে ৪২ শতাংশ গ্যাস খরচ হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে।  এছাড়া ১৭ শতাংশ শিল্পে, ৮ শতাংশ সার উত্পাদন, ১১ শতাংশ গৃহস্থালির কাজে এবং ৫ শতাংশ যানবাহনের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

২০১৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০ লাখ বাড়িতে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হয়, যাতে আবাসিক গ্যাস সুবিধা পায় দেশের ১০ থেকে ১২ শতাংশ মানুষ।

হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণ প্রায় তিন বছর নতুন আবাসিক গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও ২০১৩ সালে তা তুলে নেওয়া হয়।

এর আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও গৃহস্থালির কাজে পাইপ লাইনের গ্যাস না দেওয়ার পক্ষে বলেছিলেন। আর যানবাহনে, বিশেষ করে ব্যক্তিগত গাড়িতে সস্তায় গ্যাসের ব্যবহার নিয়েও বিভিন্ন সময়ে সমালোচনা হয়েছে। 

সিলেট চেম্বারের সঙ্গে বৈঠকে ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরির আধুনিকায়নের আশ্বাস দিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন,ওই এলাকায় নতুন আরেকটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

ফেঞ্চুগঞ্জে নির্মাণাধীন শাহজালাল সার কারখানা আগামী জুন মাসে উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে আমির হোসেন আমু বলেন, ইতোমধ্যে ওই কারখানার ১১টি ইউনিটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮টি ইউনিটের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ।

নতুন কারখানা চালু হলে পুরনো সার কারখানাটি অ্যামোনিয়া কারখানায় রূপান্তরিত করা হবে, যাতে সরকারের অ্যামোনিয়া আমদানি কমবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি ফারুক আহমদ মিসবাহ, ব্যবসায়ী নেতা কলন্দর আলী, আবদুল মান্নান, মুশফিক জায়গীরদার, আবদুল্লাহ আল মামুন, আলীমুল এহসান চৌধুরী, নোমান মাহমুদ, আবুল মিয়া বক্তব্য দেন।