মুদ্রপাচারে সহায়তার দায় স্বীকার করে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসির শীর্ষ দুই কর্মকর্তা।
Published : 26 Feb 2015, 08:41 AM
এই ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে এক কোটি ৩০ লাখ ডলার সুইজারল্যান্ডে পাচারের তথ্য উঠে এসেছে ব্যাংকটির ফাঁস হওয়া নথিতে।
এইচএসবিসি প্রাইভেট ব্যাংক (সুইস) মুদ্রাপাচারে গ্রাহকদের সহায়তা করে কোম্পানির প্রতি মানুষের আস্থা বিনষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেছেন এইচএসবিসি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট গালিভার।
এইচএসবিসির চেয়ারম্যান ডগলাস ফ্লিন্টও এ ঘটনায় দায় স্বীকার করেছেন।
এইচএসবিসি প্রাইভেট ব্যাংক (সুইস) বিভিন্ন দেশের বিত্তশালীদের কর ফাঁকিতে সহায়তা করেছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়।
বিষয়টি নিয়ে বুধবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের ট্রেজারি কমিটির মুখোমুখি হন এইচএসবিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
ব্যাংকের সুইস শাখার এই কর কেলেঙ্কারির জন্য কমিটির সদস্যরা তাদের পদত্যাগের আহ্বান জানালে তা নাকচ করেন ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশোধনী চালানোর কথা বলেছেন তারা।
ব্যাংকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড আর যাতে না ঘটে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায় নিয়ে তিনি বলেন, “এরইমধ্যে আমি বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছি।”
এইচএসবিসি থেকে চুরি হওয়া তথ্য নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের দৈনিক গার্ডিয়ান, ফরাসি পত্রিকা ল্য মঁদ, বিবিসি ও ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টের (আইসিআইজে) সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সম্পদশালীদের সুইজারল্যান্ডে অর্থ নিতে সহায়তা করেছে এইচএসবিসি প্রাইভেট ব্যাংক (সুইস)।
সুইজারল্যান্ডে এইচএসবিসির কার্যক্রম পরিচালিত হয় এইচএসবিসি প্রাইভেট ব্যাংক (সুইস) নামে।
অর্থপাচারের তথ্য প্রকাশের পর গত সপ্তাহে জেনেভায় এইচএসবিসির কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়। কারা সেখানে অর্থ জমা রাখেন এবং অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির সঙ্গে কারা জড়িত সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে ওই তল্লাশি বলে সুইজারল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেলের অলিভিয়ের জরনট জানিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও আর্জেন্টিনায়ও ব্যাংকটির শাখায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের ওই সব প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকেও অর্থপাচারের কথা বলা হয়।
তাতে বলা হয়, এইচএসবিসির ১৭টি হিসাবের মাধ্যমে ১৬ জন গ্রাহক ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে এক কোটি ৩০ লাখ ডলার পাচার করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইজারল্যান্ডে এইচএসবিসি প্রাইভেট ব্যাংকে ১৯৮৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশিদের ৩৪টি হিসাব খোলা হয়। এর মধ্যে বর্তমানে ৩১টি সক্রিয় আছে। ২০০০ সালের পর হিসাব খোলার প্রবণতা বাড়ে।
তবে এইচএসবিসি ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখায় অর্থপাচারের কোনো তথ্য না থাকার কথা বলেছেন এর কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা শাখার তলবে হাজির হয়ে তারা একথা বলার পর ব্যাংকটির সুইস শাখায় তথ্য চাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।