রোজার মধ্যভাগে এসে সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিন জমজমাট বেচা-বিক্রির পর ক্রেতার চাপ কমায় ‘মন ভরছে না’ ঢাকার পোশাক বিক্রেতাদের।
Published : 11 Jun 2017, 08:34 PM
তারা বলছেন, অন্যান্য বছর এ সময় ‘কাস্টমারদের’ চাপে যেখানে হিমশিম খেতে হয়েছে সেখানে এ বছর গুটিকয় ক্রেতা পাচ্ছেন তারা। এই সপ্তাহে ভিড় কিছুটা বাড়লেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না।
রোববার রাজধানীর গাউছিয়া, চাঁদনি চক, নূর ম্যানশন, হকার্স মার্কেট এবং মিরপুর ও মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে বিক্রেতাদের এই প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়।
মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি'র জেক্স টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপক গোলাম সাদেক জানান, দেশে তৈরি সব ধরনের সুতির শাড়ি বিক্রি করেন তারা। ঈদ উপলক্ষে যেমন ক্রেতা সমাগম হওয়ার আশা করেছিলেন তা হচ্ছে না।
“যেহেতু আজ পনেরো রোজা, সে অনুযায়ী ক্রেতাদের ভিড়ে তো আমাদের সময় থাকার কথা না। অথচ ক্রেতা তেমন নেই। তার ওপর আবার বৃষ্টি। এবার ঈদে ব্যবসা ভালো যাবে না।”
এই বিপণিবিতানের ‘শেলী ফেব্রিক্স’- এ তাকে তাকে সাজানো বিভিন্ন ডিজাইনের মেয়েদের আনস্টিচ থ্রি-পিস। দোকানটিতে বেশ ভিড় দেখা গেলেও তেমন বিক্রি না হওয়ার কথা বলেন তারা।
“আর কিনবে কেন? সরকার ভিসা দিয়ে দিচ্ছে, সবাই তো দিল্লি-বোম্বেতে গিয়ে শপিং করবে। ব্যবসায়ীদের কথা তারা ভাবছে কখনও?”
বিকালে চাঁদনি চক, গাউছিয়া, নূর ম্যানশন ও নিউ মার্কেটে ক্রেতা সমাগম দেখা গেলেও হকার্স মার্কেটে ছিল হাতে গোনা কয়েকজন।
এই মার্কেটের মোহাম্মদিয়া শাড়ীজ- এর বিক্রয়কর্মী সোলাইমান বলেন, “শুক্র-শনিবার কিছু কাস্টমার পাইছিলাম, কিন্তু এখন আবার আগের মতো। বিক্রি খুব কম, যে কয়জন পাচ্ছি, তারা কম দামি সুতি শাড়িই বেশি কিনছে।”
সেখানে শাড়ি কিনতে আসা শিউলি আক্তার বললেন, কোনো উপলক্ষ ছাড়া তেমন শাড়ি পরা হয় না, তাই এবারের ঈদেও নিজের জন্য শাড়ি কিনছেন না। মার্কেটে এসেছেন মা আর খালা শাশুড়ির জন্য শাড়ি কিনতে।
“কিন্তু অন্যান্যবারের তুলনায় এবার বিক্রিটা কম।”
বলাকা সিনেমা হলের পাশে জুতার ব্র্যান্ড 'বে ইম্পোরিয়াম'র শো-রুমের বিক্রয়কর্মী রাসেল বলেন, অন্য সময়ের মতোই বিক্রি হচ্ছে তাদের।
“যেহেতু মানুষ কেনা-কাটা শেষে জুতা কেনে, তাই এখন ভিড়টা কম।”
২০ রোজার পর বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
মিরপুর-১ নম্বরে মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্স ও মিরপুর-২ নম্বরের পোশাকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা থাকলেও তাতে মন ভরছে না বিক্রেতাদের।
“আর কয়দিন পর তো সবাই দেশে চলে যাবে, এখন না কিনলে কিনবে কবে? কিন্তু কাস্টমার তো তেমন আসছে না, সন্ধ্যার পর ভিড়টা কিছুটা বাড়ে।”
মিরপুর-২ নম্বরে বাবা আর ছেলের জন্য কেনাকাটা করতে মার্কেটে আসা শফিউল আলম বলেন, “তীব্র গরম আর বৃষ্টির কারণে সুযোগ না হওয়ায় এতদিন কেনা-কাটা করিনি।
“এখন তো আর দুই সপ্তাহ বাকি। তাই শপিং করতে বেরিয়েছি। দেখা যাক, পছন্দসই কিছু পাওয়া যায় কি না।”