পেঁয়াজের ঝাঁজ কমাতে পদক্ষেপ

পেঁয়াজের দর তিন দিনে ৩৩ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার পর এই নিত্যপণ্যের বাজার ঠিক রাখতে টিসিবির মাধ্যমে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2015, 04:00 PM
Updated : 24 August 2015, 04:02 PM

পাশাপাশি বাজারে নজরদারি বাড়ানো এবং বন্দর থেকে পেঁয়াজের চালান দ্রুত ছাড় করানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। 

শুক্রবার যে পেঁয়াজ বাজারে কেজিপ্রতি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, সোমবার তা ৮৫ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বৈঠক হয়। 

বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, “পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, টিসিবিকে পেঁয়াজ আমদানির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

“এছাড়া বাজারে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বন্দরগুলোকে পেঁয়াজের চালান দ্রুত ছাড় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমদানিতে সহজে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।”

ভারত রপ্তানিমূল্য টনপ্রতি ৭০০ ডলারে বেঁধে দেওয়ার পর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দর। বন্যার কারণে এবার ভারতেও এই কৃষিপণ্যটির উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।

রাজধানী কারওয়ান বাজারে সোমবার দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে।

সরকারি বিপণনকারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) সোমবার বাজারদরের যে তথ্য দিয়েছে, তাতে দেখা যায়, প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের দর ৮৫ থেকে ৯০ টাকা।

গত শনিবার ভারত নিজেদের বাজার সামাল দিতে পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য টনপ্রতি ন্যূনতম ৭০০ ডলারে উন্নীত করে, এর আগে তা ছিল ৪২৫ ডলার।

রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে ভারত দাম বাড়িয়েছে। উৎপাদন কম হওয়ায় দেশটি আফগানিস্তান, মিশর ও পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করে, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ও আমদানি ভালো থাকায় দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাই সোমবারের জরুরি বৈঠকে অতিরিক্ত মুনাফা রোধে অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ায় দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। তবে এই বাড়তি দামে বিক্রির যৌক্তিকতা নেই। বর্তমানে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এখন আমদানি না হলেও যে পেঁয়াজ আছে, তা দিয়ে এপ্রিল পর্যন্ত চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।”

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলের হিসাবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২২-২৩ লাখ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, বাংলাদেশের কৃষকরা গত মৌসুমে ১৯ লাখ ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন করেছেন।