তবে পরিকল্পিতভাবেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। মামলাটি থানা পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে।
হত্যাকারীরা তিনজন ছিলেন এবং একটি মটরসাইকেলে এসে গুলি করে তাদের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য থানার সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে তাদের চেহারা স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন।
গত ২৬ জুন রাত সাড়ে ১২টার দিকে সার্কুলার রোডের বাসায় ফেরার পথে কলাবাগান থানার কাছে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ওবায়দুল। পরে রাতে আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
ওবায়দুল যে রিক্সায় করে বাসায় ফিরছিলেন সেই রিকশার চালক আহত অবস্থায় তাকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি সানোয়ারা গ্রুপের মালিক। পিতৃহীন ওবায়দুল মামার প্রতিষ্ঠানে চাকরি ছাড়াও সার্কুলার রোডে তার বাড়িতেই থাকতেন।
কলাবাগান থানার ওসি মোহাম্মদ ইকবাল বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্তে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু পাওয়া যায়নি। তবে হত্যার ধরণ দেখে পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে।
“ছিনতাইকালে বাধা দেওয়ার কারণে গুলির ঘটনাও ঘটতে পারে, এ বিষয়টিও আমরা তদন্ত করছি।”
তিনি বলেন, থানার সামনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় একটি মটরসাইকেলে তিনজন যাচ্ছেন এবং তাদের কাছে ওবায়দুলের ব্যাগটি দেখা যাচ্ছে। তবে সে সময় বৃষ্টি হওয়ায় তাদের চেহারা স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না।
তবে ফুটেজটি আরও পর্যবেক্ষণ করা হবে জানিয়ে ওসি বলেন, নিহতের কয়েক ঘনিষ্ঠজন চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন।
“তাদেরও ফুটেজটি দেখানো হবে। তারা কাউকে চিনতে পারে কি না তা জানার চেষ্টা করা হবে।”
চাকরি, পারিবারিক বা অন্য কিছু নিয়ে ওবায়দুলের কারও সঙ্গে বিরোধ ছিল কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, “এখনও সে ধরনের কোনো তথ্য আমরা পাইনি। তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও সমস্যা-বিরোধের বিষয়টি তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছে।”
যে বাসায় ওবায়দুল থাকতেন সে বাসার তিনতলায় থাকেন সানোয়ারা গ্রুপের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা অরুপ রতন রায়।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওবায়দুলের স্বজনদের ঢাকায় আসার খবর পেয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোয়েন্দা পুলিশ তার বাসায় আসে। তারা বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করে ওবায়দুলের স্ত্রী সোনিয়াসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন।
“ঘটনাটি ছিনতাইয়ের হলে ব্যাগ নিয়ে শুধু পায়ে বা শরীরের অন্য কোথাও গুলি করতো, আমার বিশ্বাস বিষয়টি পরিকল্পিত এবং মাথায় ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যার জন্যই,” বলেন অরুপ রতন।
চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে ওবায়দুল সবার ছোট। তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার চাঁন্দগাঁও এলাকার পূর্ব ষোলো শহরের খাজা রোডে।
মাত্র পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেন ওবায়দুল। তার স্ত্রী আইনজীবী।
হত্যার ঘটনায় ওবায়দুলের খালাতো ভাই ইয়াসির মো. আদনান বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেছেন।