রায়ের পর জামায়াতের হরতালের বার্তা

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ আদালতে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2015, 06:49 AM
Updated : 16 June 2015, 06:49 AM

মঙ্গলবার আপিল বিভাগের রায়ের পর দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদের নামে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে এই হরতালের বার্তা দেওয়া হয়। জামায়াতের ওয়েবসাইটেও ওই বিবৃতি দেওয়া হয়। 

এতে বলা হয়, “আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে হত্যার সরকারি ষড়ন্ত্রের প্রতিবাদে, তিনিসহ আটক জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবিতে ১৭ জুন বুধবার সকাল ৬টা থেকে ১৮ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ২৪ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”

এর আগে আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হওয়া তিনটি যুদ্ধাপরাধ মামলার চূড়ান্ত রায়ের পরও হরতাল ডাকে জামায়াত। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের রায়ের পরও একই কর্মসূচি দেয়, দলটি, যাতে সারা দেশে ব্যাপক নাশকতা চালায় জামায়াত-শিবির কর্মীরা।   

মকবুল আহমাদের নামে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়,“সরকার জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে।”

অথচ একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে সময় এই জামায়ত নেতাদের পরিকল্পনায়, তাদের নেতৃত্বেই যে রাজাকার, আল বদর বাহিনীর মত সশস্ত্র দল গড়ে তুলে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠরোধের চেষ্টা ও ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ঘটানো হয়েছিল, তা প্রতিটি রায়েই উঠে এসেছে।

বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মুজাহিদ একাত্তরে ছিলেন জামায়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি। সেই হিসাবে পদাধিকার বলে তিনি আল বদর বাহিনীরও নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যদের নিয়েই ওই  বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্প তৈরি করে, যেখানে রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের শীর্ষ নেতা মুজাহিদের নিয়মিত যাতায়াত ছিল সেখানে। ঊর্ধ্বতন সেনা অফিসারের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী নানা অপরাধের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্রও করতেন তিনি। এ ধরনের ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়েই ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী নিধনসহ গণহত্যার মতো ঘটনা সংঘটিত হয় বলে মামলার বিবরণে বলা হয়।  

ট্রাইব্যুনালের বিচারে ওই অভিযোগে মুজাহিদ দোষী সাব্যস্ত হন। মঙ্গলবার আপিলের রায়েও সেই সাজা বহাল থাকে।

জামায়াতের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “মুজাহিদ এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ দায়ের করবেন। রিভিউ আবেদনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে জনাব মুজাহিদ খালাস পাবেন বলে আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি।”