এ প্রজন্মেই ক্ষুধামুক্ত বিশ্বের স্বপ্ন

সাতশ কোটি মানুষের এই পৃথিবীতে ক্ষুধার্থ মানুষের সংখ্যা কমে ৮০ কোটির নিচে নেমে এসেছে, যেখানে বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে ক্ষুধার্ত মানুষের হার কমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2015, 07:23 AM
Updated : 28 May 2015, 09:06 AM

জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির (এফএও) বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯০-৯২ সময়ে যেখানে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ লোক (মোট জনসংখ্যার ৩২.৮ শতাংশ) সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার পেত না, ২০১৪-১৬ সময়ে তা কমে এসেছে ২ কোটি ৬০ লাখে, যা মোট জনসংখ্যার ১৬.৩ শতাংশ।   

এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে এফএও’র পর্যবেক্ষণে থাকা ১২৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ মোট ৭২টি দেশ ক্ষুধা দূরীকরণে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে বলে বুধবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

রোমভিত্তিক সংস্থাটি বলছে, এখনো বিশ্বের ৭৯ কোটি ৫০ লাখ লোক প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার পাচ্ছে না। তবে এই সংখ্যা ১৯৯০-৯২ সময়ের চেয়ে ২১ কোটি ৬০ লাখ কম।

এফএও’র মহা পরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো ডা সিলভা এই প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক বিবৃতিতে বলেন, “সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সাম্প্রতিক সাফল্য আমাদের বলছে, চেষ্টা করলে আমাদের জীবদ্দশাতেই একটি ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব হয়ত আমরা দেখে যেতে পারব। আমাদের লক্ষ্য এখন ‘জিরো হাঙ্গার জেনারেশন’ হওয়া।”

বিশ্বের সব দেশের নীতি কাঠামোতেই এই লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দেন তিনি। 

আন্তর্জাতিক কৃষি তহবিলের প্রেসিডেন্ট কানাইয়ো এফ নোয়ানজি বলেন, “আমরা যদি সত্যিই ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্তি একটি বিশ্ব চাই, তাহলে সবার আগে আমাদের উন্নয়নশীল দেশগুলোর পল্লী এলাকার পরিস্থিতির উন্নয়নে মনোযোগ দিতে হবে, কেননা সেখানেই বিশ্বের অধিকাংশ গরিব মানুষের বসবাস।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯০-৯২ সময়ে যেখানে উন্নয়নশীল বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ, সেখানে ২০১৪-১৬ সময়ে তা ১২ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে।

তবে একইসঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির স্লথ গতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং গৃহযুদ্ধ অনেক দেশের সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত করেছে।