ধর্ষকদের চিহ্নিতের চেষ্টায় পুলিশ

রাজধানীতে চলন্ত মাইক্রোবাসে গারো তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।

গোলাম মুজতবা ধ্রুব নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2015, 01:20 PM
Updated : 23 May 2015, 01:55 PM

এরইমধ্যে তরুণীর কর্মস্থল যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে ভিডিওচিত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। যে এলাকা থেকে তাকে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়েছিল এবং যেখানে তাকে ফেলে যাওয়া হয়েছে সেখানকার বাসাবাড়ির সিসিটিভিতে কোনো ফুটেজ পাওয়া যায় কি না সেদিকেও নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার লুৎফুল কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কাছাকাছি সময়ে ঢাকায় এই ধরনের ঘটনা সংঘটিত হয়নি। ঘটনাটি অত্যন্ত পৈশাচিক, তা সর্বোচ্চ গুরুত্বের দাবি রাখে। এটি তদন্তে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছি।”

এই ধরনের অপরাধ কারা করে থাকতে পারে সে বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো তথ্য আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

লুৎফুল কবির জানান, তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে ওই তরুণী, তার পরিবার ও যমুনা ফিউচার পার্কের যে দোকানে তিনি বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন সেখানে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা।

“ভিকটিম ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর যেখানে তরুণীটি কাজ করতো সেখানের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়। তবে ওই দোকানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তাই দোকানের কোনো ভিডিওফুটেজ সংগ্রহ করা যায়নি। তবে যমুনা ফিউচার পার্কের যে ক্যামেরার আওতায় ওই দোকানটি রয়েছে সেটি শনাক্ত করে ফুটেজ সংগ্রহ করে কাজ শুরু করা হয়েছে।”

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষারত ওই গারো মেয়েটিকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে পাঁচ ব্যক্তি দেড়ঘণ্টা ধরে ধর্ষণ করে। পরে তারা মেয়েটিকে উত্তরার জসিম উদ্দিন রোডে ফেলে রেখে যায়।

এ ঘটনার পর শুক্রবার ভাটারা থানায় মামলা করে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার। 

২১ বছর বয়সী ওই তরুণী যমুনা ফিউচার পার্কের একটি পোশাকের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। বড় বোনের সঙ্গে উত্তরায় থাকেন।

পাশবিকতার শিকার তরুণীটির বড় বোন শুক্রবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, গত সপ্তাহের শুরুতে এক লোক দুই বিদেশি নারীকে নিয়ে যমুনা ফিউচার পার্কের ওই দোকানে যান, যেখানে তার ছোট বোন কাজ করেন।

“আমার বোন কোথায় থাকে, কত বেতন পায়, পরিবারে কে কে আছে জানতে চেয়েছিল তারা। ও বলেছে, মাইক্রোবাসে পাঁচজনের মধ্যে সেই লোকও ছিল। দোকানের সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে তাকে ও চিনতে পারবে বলে মনে হয়।”

উপকমিশনার লুৎফুল কবির বলেন, “যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে এবং শেষ হয়েছে সেই এলাকাগুলোর বাসার সিসিটিভি ক্যামেরাতে ওই গাড়ির কোনো চিত্র পাওয়া যায় কি না তাও খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। গাড়িটিকেও আমরা শনাক্ত করতে চাইছি।”

দলবদ্ধ পাশবিকতার শিকার ওই তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পেয়েছেন চিকিৎসকরা। 

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য শনিবার সকালে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে নেয় পুলিশ।

পরীক্ষা শেষে দুপুরে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান মো. হাবিব উজ জামান চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছি। প্রাথমিক রিপোর্টে ধর্ষণের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।”