কিশোরগঞ্জে ঘরবাড়ি-দোকানে তাণ্ডব; হতভম্ব শহরবাসী

কিশোরগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গাড়ি ভাংচুরের পর লুটপাট চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2015, 02:30 PM
Updated : 18 April 2015, 02:30 PM

শুক্রবার রাতে শহরের চর শোলাকিয়া, পুরান থানা ও বড় বাজার এলাকায় এই তাণ্ডব চালানো হয় বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন।

এদিকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে রাতের অন্ধকারে নির্বিচার হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্ন ও হতভম্ব হয়ে পড়েছেন শহরবাসী ও ব্যবসায়ীরা।

ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত সাতজনকে আটক করার কথা জানালেও তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম পরিচয় জানায়নি পুলিশ।

হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রে আহত সালমান গালিব, বোরহান সাদেক, তকিউল্লাহ, সাদেক ও শাহাব উদ্দিন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা সবাই জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয়ের অর্ধ শতাধিক তরুণ হকি স্টিক, রাম দা ও লাঠিসহ বিভিন্ন রকম দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শহরের চর শোলাকিয়া এলাকায় অতর্কিত হামলা করে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা ওই এলাকার ১৫টি বসতবাড়ি ও তিনটি দোকান নির্বিচারে ভাংচুর করে। 

এ সময় মালামাল ভাংচুরের পাশাপাশি নগদ টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় দোকান মালিকরা।

এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা মদন গোবিন্দ দাস বলেন, “রাতে হঠাৎ করে একদল সশস্ত্র তরুণ আমার বাসাসহ আশপাশের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ভাংচুর করে। এ ধরণের নারকীয় ঘটনা আমি সারা জীবনে দেখিনি।”

ক্ষতিগ্রস্ত হাজি স্টোরের মালিক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “হামলাকারীরা আমার দোকান ভাংচুর করে ক্যাশ থেকে ২০ হাজার টাকা লুটে নিয়ে যায়।”

একই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ননী নাথ ভৌমিক।

চর শোলাকিয়া এলাকায় ভাংচুর-লুটপাটের পর হামলাকারীরা শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরান থানার দিকে যাওয়ার পথে ওই পাঁচজনের ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপককে বহনকারী গাড়ি ভাংচুর করে।

হামলাকারীরা পুরান থানা এলাকার বিশ্বাস হেয়ার কাটিং সেলুন, মায়া বেকারি ও একটি মোটরসাইকেল মেরামতের দোকান ভাংচুর করে নরসুন্দা নদীর দক্ষিণ পাড় এলাকায় বড় বাজারে হামলা চালায়। বড় বাজারে ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার মধ্যে ভুলু হাজির মুদি দোকান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হামলাকারীদের তাণ্ডব চলাকালে পুরো এলাকাজুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

মায়া বেকারির মালিক নয়ন বসাক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রে নির্বিচার হামলার ঘটনায় ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন ও হতভম্ব হয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ীদের দোকানপাটে নজিরবিহীন হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. কামরুল হাসান।

সদর থানার ওসি মীর মোশারফ বলেন, হামলার কারণ এবং আটকদের নাম পরিচয় চিহ্নিত করা যায়নি।

পুলিশ হামলাকারী সবাইকে গ্রেপ্তার এবং ঘটনার পেছনের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।