পরিচয় না দিয়ে টেলিটকে ফোন প্রতিমন্ত্রীর, সেবা মিলল না

পরিচয় গোপন রেখে টেলিটকের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে গ্রাহকদের অভিযোগের সত্যতা পেলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সাজিদুল হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2015, 12:50 PM
Updated : 17 April 2015, 10:04 AM

জাতীয় সংসদ ভবনে বৃহস্পতিবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে টেলিটকের সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে প্রতিমন্ত্রী বৈঠক থেকেই কল করেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লাউড স্পিকার অন করে প্রতিমন্ত্রী কথা বলেছিলেন, ফলে বৈঠকে উপস্থিত টেলিটকের কর্মকর্তারাও ওই কথোপকথন শোনেন।

এর আগে ওই বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটকের কাস্টমার কেয়ারের সেবার মান অন্যান্য বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরদের মতো নয় বলে আলোচনা হয়।

অভিযোগের কথা বলা হলেও টেলিটক কর্মকর্তারা তা মানতে রাজি না হওয়ায় প্রতিমন্ত্রী প্রকৃত চিত্র জানতে সরাসরি নিজেই ফোন করেন বলে সংসদীয় কমিটির এক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

প্রতিমন্ত্রী পলক তার নিজের ফোন থেকে টেলিটকের কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে ‘থ্রি-জি’ ইন্টারনেট গ্রাহক হিসেবে নিজের সমস্যার কথা বলেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, কাস্টমার কেয়ারের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর কথা হয়। তবে নিজের সমস্যার কথা জানানোর পরও কোনো সমাধান তিনি পাননি।

বৈঠক শেষে পলক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা চাই সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেলিটক অন্যান্য বেসরকারি অপারেটরদের মতো সেবামুখী হোক। এজন্য বাস্তব অবস্থাটা সরাসরি দেখাতেই ফোন দিয়েছিলাম।”

টেলিটকের ‘থ্রি-জি’ ইন্টারনেট সুবিধা সবসময় একই মানে পাওয়া যায় না বলে গ্রাহকদের অভিযোগ রয়েছে।

তারা বলছেন, কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিলে সঠিক সেবা পাওয়া যায় না। কাস্টমার কেয়ার থেকে গ্রাহকের অবস্থানের এলাকা, হ্যান্ডসেট ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তবে সঠিক সমাধান তারা দিতে পারেন না।

প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, ফোন করলে তাকেও এই প্রশ্নগুলো করা হয়।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) কল সেন্টারে ফোন দিয়েও তার প্রায় একই অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানান তিনি।

‘কাগজ না দিলে বৈঠকে বের করে দেব’

এদিকে বৈঠকের আলোচ্যসূচি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কার্যপত্র না দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কমিটি।

নিয়ম অনুযায়ী বৈঠকের অন্তত তিন দিন আগে কার্যপত্র সংসদ সচিবালয়ের কমিটির শাখায় পাঠাতে হয়। মন্ত্রণালয় এসব কাগজ পাঠায়।

বৃহস্পতিবার বৈঠকে এসব কাগজপত্র কমিটিতে উপস্থাপন করা হয়।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “কয়েকবার রিমাইন্ডার দেওয়া হলেও তারা কাগজ দেয় নাই। আমি বলেছি আগামীতে এমন হলে কমিটির বৈঠক থেকে বের করে দেব।”

সারাদেশের এক হাজার ইউনিয়ন ও ২৯০টি উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পে ধীরগতিতে কমিটি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

ইমরান বলেন, “২০১১ সালে এই প্রকল্পের কাজ অনুমোদন পায়। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে ২০১৪ সালে। কমিটি এত ধীর গতির কারণ জানতে চেয়েছে।”

ইমরান আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী পলক ছাড়াও কমিটির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও শরীফ আহমেদ অংশ নেন।

এছাড়া বিটিসিএল, টেশিস, টেলিটক, বিটিআরসি, কেবল শিল্প লিমিটেডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।