এইচএসসিতে বসছে ১১ লাখ শিক্ষার্থী

হরতাল না থাকলেও অবরোধের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা নিয়েই বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2015, 04:30 PM
Updated : 31 March 2015, 04:30 PM

বাংলাদেশের ২ হাজার ৪১৯টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৩০৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৪ জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্র এবং বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্রের (ডিআইবিএস) পরীক্ষা রয়েছে।

কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা) দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা-২, একাদশ শ্রেণিতে বাংলা-১ (সৃজনশীল, নতুন সিলেবাস) ও বাংলা-১ (সৃজনশীল, পুরাতন সিলেবাস) পরীক্ষা হবে।

এছাড়া কারিগরি বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন কমার্সে দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা-২, একাদশ শ্রেণিতে বাংলা-১ (সৃজনশীল) এবং মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলীমে কুরআন মাজিদ (সকল বিভাগ) পরীক্ষা রয়েছে।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত বছরের থেকে এবার ৬৭ হাজার ৪৯০ জন কম শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

বিএনপি জোটের অবরোধ-হরতালে এসএসসি ও সমমানের সবগুলো অর্থাৎ, ১৬ দিনের ৩৬৮টি পরীক্ষা পেছাতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষাগুলো নেওয়া হয় ছুটির দিনে, শুক্র ও শনিবার।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে টানা অবরোধ চালিয়ে আসা বিএনপি জোট ফেব্রুয়ারি ও মার্চের বেশিরভাগ সময় ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই হরতাল করে এসেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগেই ঘোষণা দিয়েছিল, এইচএসসি পরীক্ষার সময় হরতাল থাকলেও যে কোনো মূল্যে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

তবে বিএনপির নামে মঙ্গলবার যে বিবৃতি এসেছে, তাতে সারাদেশে অবরোধ চালানোর কথা থাকলেও বুধবার হরতাল না দিয়ে গণমিছিলের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার হরতাল ডাকা হলেও সেদিন পরীক্ষা নেই।

প্রথম দিন পরীক্ষার সময় হরতাল না থাকলেও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা জানিয়েছেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

এইচএসসি পরীক্ষার্থী রেদোয়ান আহমেদ বলেন, “অবরোধের মধ্যেও তো পেট্রোলে বোমায় মানুষ মরছে, তাই পরীক্ষাকেন্দ্রে আসা-যাওয়া নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।”

ঢাকায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠন ‘অভিভাবক ঐক্য ফোরাম’র সভাপতি জিয়াউল কবীর দুলু মনে করছেন অবরোধের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।

“আমরা তো রাজনীতিবিদদের হাতে বন্দি হয়ে গেছি। সবাই এথেকে মুক্তি চায়। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হওয়া উচিত।”

পরীক্ষা চলাকালে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি স্থগিত রাখতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

মিরপুরের গৃহিনী আরিফা আক্তার বলেন, “মেয়েকে নিয়ে কিভাবে পরীক্ষার হলে যাব, তা নিয়েই আমাদের সব চিন্তা। পরীক্ষার সময় আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাই।”

২০১৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ছবি

এইচএসসিতে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এবার ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৯৩৩ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৮৪ হাজার ৩৬০ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম/ভোকেশনালে ৯৮ হাজার ২৪৭ জন এবং ডিআইবিএসে চার হাজার ৩৪৪ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।

মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৩ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ দুই হাজার ৮৯১ জন ছাত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, ঢাকার বাইরে এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২৪১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে, এর মধ্যে ১১০ জন ছাত্র এবং ১৩১ জন ছাত্রী।

এবার বাংলা প্রথম পত্র, রসায়ন, পৌরনীতি, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ, জীববিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ ও ব্যবহারিক ব্যবস্থাপনা, সমাজ বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার শিক্ষা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রেরসহ মোট ২৫টি বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে জানিয়েছেন নাহিদ।

এবারো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এক্ষেত্রে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরতদের শ্রুতিলেখক নিযুক্ত করা যাবে বলে জানান মন্ত্রী।

শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী, বুদ্ধি ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা অন্য সময়ের মত এবাবো অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবেন।