নিষিদ্ধ ঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) এক নেতাকে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে চট্টগ্রামের পুলিশ।
Published : 23 Mar 2015, 10:52 AM
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার এরশাদ হোসেন ওরফে মামুন (২০) আগে দিনাজপুরে ছাত্রশিবির করতেন। পরে জেএমবিতে যোগ দিয়ে চট্টগ্রামের জেলা কমান্ডার হয়। তার বাড়ি দিনাজপুরের বিরোল উপজেলার বালান্দরপুর গ্রামে।
নগরীর আকবর শাহ থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ জানান, সোমবার সকালে নিউ মনসুরাবাদ বাগানবাড়ি সংলগ্ন শাপলা মোড়ে রেললাইনের কাছের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, গান পাউডার, বোমাসদৃশ বস্তু ও জিহাদি বই উদ্ধার করে পুলিশ।
মামুনের বাসা থেকে উদ্ধার করা গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জামের সঙ্গে শিবির নিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রাবাস থেকে জব্দ করা অস্ত্র-বিস্ফোরকের মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (সিএমপি) আবদুর জলিল মণ্ডল।
জেএমবির সঙ্গে শিবির ও হুজিসহ (হরকাতুল জিহাদ) অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর যোগাযোগ রয়েছে দাবি করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “তারা তাদের নিজস্ব ভাবধারা নিয়ে কাজ করলেও সরকারবিরোধী আন্দোলনে এক।”
২০১১ সালে দিনাজপুরের একটি স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করা মামুন বগুড়ায় গিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে যুক্ত হয়ে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে আসেন।
এরপর নগরীর কর্নেল হাট এলাকায় জেএমবি পরিচালিত একটি ফটোকপির দোকানে কাজ করতেন বলে মামুন সাংবাদিকদের জানান।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, “এসব দোকানে আমাদের সংগঠনের কর্মীরা কাজ করে। চট্টগ্রামেই জেএমবি পরিচালিত প্রায় ১০০টি দোকান রয়েছে। এছাড়া অনেক জেএমবি সদস্য ফুটপাতে হকার হিসেবেও কাজ করে থাকে। ”
মামুন সাংবাদিকদের বলেন, বগুড়ায় গিয়ে ফুয়াদ ওরফে রকি নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তার মাধ্যমে চট্টগ্রামে এসে দায়িত্ব নেন তিনি।
ফুয়াদ জেএমবির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমান্ডার বলেও দাবি করেন তিনি।
মামুনকে ধরতে ধরতে সহায়তা করা আনসার সদস্য আব্দুল হামিদ ও নজরুল ইসলাম জানান, শাপলা মোড় রেললাইনের পাশে একটি টিনশেডের বাসায় ভাড়া থাকতেন মামুন।
রেললাইনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এই আনসার সদস্যরা আরও জানান, মাস দেড়েক আগে মামুন সেখানে বাসা ভাড়া নিলেও স্থানীয় লোকজন তাকে চিনত না। গতিবিধি সন্দেহজনক বলে এলাকাবাসী বিষয়টি আনসার সদস্যদের জানিয়েছিল।
সোমবার ভোরে মামুনের সঙ্গে স্থানীয় এক নারীর বাদানুবাদ হলে ওই নারী তার সন্দেহের বিষয়টি আনসারকে জানান। এরপর আনসার সদস্য দ্রুত ঘটনাটি থানায় জানালে পুলিশে ওই বাসায় গিয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ মামুনকে আটক করে।
জেএমবি সদস্য মামুনকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন আকবর শাহ থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ।