‘শ্মশান আতঙ্কে’ অসুস্থ শতাধিক পোশাক শ্রমিক

সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় একটি পোশাক কারখানার শতাধিক শ্রমিক ‘আতঙ্ক’ থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2015, 08:35 AM
Updated : 1 Feb 2015, 09:06 AM

কারখানার বর্ধিত অংশে এক সময় শ্মশান ছিল-এ কথা জানার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে তারা একে একে অসুস্থ হতে শুরু করেন বলে গার্মেন্টের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সাভার মডেল থানার ওসি মোতালেব মিয়া জানান, রোববার সকালে ‘এ কে এইচ নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড’ কারখানায় এ ঘটনার পর থেকে একদিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।

কারখানার মান নিয়ন্ত্রক (পোশাক) মাহাদী হাসান জানান, অসুস্থদের মধ্যে ৩১ জনকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ২৫ জনকে ফুলবাড়িয়ার আফনান হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এবং ১০ জনকে প্রাইম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরো অন্তত অর্ধশতাধিক শ্রমিককে অন্যান্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এনাম মেডিকেলের ভাইস প্রিন্সিপাল ও মনোরোগ বিভাগের অধ্যাপক দেওয়ান আব্দুর রহীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা কোনো রোগ নয়, আতঙ্কগ্রস্ত হয়েই এমনটা হয়েছে। এ ধরনের সমস্যা বেশি মেয়েদের হয়। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে ‘ম্যাস হিস্ট্রিরিয়া’।”

কারখানার অপারেটর হযরত আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কারখানাটিতে প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক রয়েছে। এরইমধ্যে কারখানার বর্ধিত ভবনের কাজ চলছে।

“বর্ধিত অংশের জমিতে একসময় শ্মশান ছিল। শ্রমিকরা এ কথা শোনার পর থেকেই একের পর একজন অসুস্থ হয়ে পড়ছে,” বলেন মান নিয়ন্ত্রক মাহাদী।

ফিরোজা বেগম, শামসুন্নাহার, হাবিবুল্লাহ, পারুল, হাসিনা, রোজিনা, মাকসুদা মঞ্জুআরা, হামেদা খুতুনসহ চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজন শ্রমিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকালে কারখানায় কাজ শুরু করার এক পর্যায়ে অনেকেই টয়লেটে গিয়ে বেরিয়ে বুক চেপে ধরে বসে পড়ে। অনেকে কাজ করার এক পর্যায়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। কেউবা সহকর্মী অসুস্থ হওয়ার খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

অসুস্থ শ্রমিকদের স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

কারখানার পরিচালক এস এম সাদউল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শ্রমিকদের আতঙ্কের কারণে গত শনিবার কারখানায় মিলাদ দেওয়া হয়েছে। তবে হঠাৎ শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনায় কারখানায় একদিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।