মঙ্গলবার সকালে বুড়িঘাট ইউনিয়নের সুরিদাশ পাড়ায় এ ঘটনায় তিনটি গ্রামের ৫৭টি বসতবাড়ি ও দোকান পুড়ে গেছে।
এ ঘটনার পর পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এ ঘটনার জন্য স্থানীয় পুনর্বাসিত বাঙালিদের দায়ী করেছে।
বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমোদ বিকাশ খীসা জানান, বগাছড়ি এলাকার মো. আফসার আলী গত বছর সুরিদাশ পাড়ায় আনারস রোপণ করেন।
গত সোমবার এই আনারস বাগানটি কিছু পাহাড়িরা কেটে দিয়েছে এমন অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার সকালে শতাধিক বাঙালি বগাছড়িতে জড়ো হয়ে প্রথমে রাঙামাট-খাগড়াছড়ি সড়কে ১৪ মাইলে অবস্থিত চাকমাদের ৭টি দোকানে আগুন দেয়।
এরপর তারা পার্শ্ববর্তী সুরিদাশ পাড়া, নবীন তালুকদার পাড়া ও বগাছড়ি পাড়ায় ঢুকে ঘরবাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়।
আগুনে ৫০টি বাড়ি ও ৭টি দোকান পুড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর আইন-শৃংখলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি রুটে সড়ক চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার আমেনা বেগম, নানিয়াচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা, নানিয়াচর সেনা জোন কমান্ডার লে. কর্নেল সোহেল আহমদ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ঘটনায় নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমাকে আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল জানান, আনারস বাগান নিয়ে এই ঘটনাটি ঘটেছে। সোমবার রাতে এই আনারস বাগানটি কে বা কারা কেটে দেয়। ক্ষতিগ্রস্তদের জেলা প্রশাসন থেকে এক লাখ টাকা আর্থিক সাহায্যে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সাথে জড়িত যেই হোক তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার বিভাগের সহ-সম্পাদক সজীব চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বগাছড়ির পুনর্বাসিত বাঙালিরা ৩টি জুম্ম গ্রাম ছুরিদাস পাড়া, নবীন কার্বারী পাড়া ও বগাছড়িতে এ হামলা চালায়।
হামলাকারীরা বাড়িঘর পোড়ানো ছাড়াও এক বৌদ্ধ ভিক্ষু ও দুইজন পাহাড়িকে মারধর করেছে। একটি বৌদ্ধ বিহারের বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুর ও ৫টি পিতলের বুদ্ধমূর্তি লুট করেছে।
তিনি ঘটনার তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।