কিশোরগঞ্জের ‘শামসুদ্দিন রাজাকার’ কারাগারে

একাত্তরের মানবতাবিরোধী মামলার আসামি কিশোরগঞ্জের শামসুদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছে জেলার একটি আদালত।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2014, 11:15 AM
Updated : 28 Nov 2014, 05:41 PM

শুক্রবার বেলা ১২টায় কড়া পুলিশ পাহারায় শামসুদ্দিনকে কিশোরগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে হাজির করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন পুলিশের আদালত পরিদর্শক সুনীল চন্দ্র রায়।

বিচারক শুনানি নিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের সঙ্গে মামলার নথি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে ছিলেন না। তার ভাই এ মামলার আরেক আসামি নাছির উদ্দিন আহম্মেদ ওরফে ক্যাপ্টেন এটিএম নাছির পলাতক।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার শামসুদ্দিন ও তার ভাই নাছিরের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ার পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার হন শামসুদ্দিন। 

রাত সাড়ে ৮টার দিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল চৌরাস্তা এলাকা থেকে শামসুদ্দিন আহম্মেদকে ধরা হয় বলে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিটন কুমার জানান।

শামসুদ্দিন সেখানে চট্টগ্রামগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বলে জানা গেছে। আটকের পর তাকে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় নেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যা, নির্যাতন, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সদস্য সানাউল হক জানান, এ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৬ জুন তদন্ত কাজ শুরু হয়। এক বছর ৫ মাস ১৮ দিন তদন্ত করে ২৪ নভেম্বর তদন্ত শেষ হয়। এ মামলায় ৪০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

তদন্ত সংস্থা বলছে, মুক্তিযুদ্ধে শুরু হওয়ার পরে দুই ভাই রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন এবং করিমগঞ্জ থানা এলাকার বিদ্যানগর, আয়লা, রামনগর, কলাতলি ও করিমগঞ্জে হত্যা, নির্যাতন ও গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত হন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে নাসির উদ্দিন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে নিজের নাম-পরিচয় বদলে চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে লেখাপড়া শেষ করেন। ভুয়া পরিচয় ও ঠিকানা দিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই কমিশনও পান।

২০০২ সালের ১৩ জানুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট থেকে ক্যাপ্টেন হিসেবে অকালীন বাধ্যতামূলক অবসরে যান নাসির উদ্দিন। এরপর তিনি নিজের এলাকায় ফিরে যান।

আর শামসুদ্দিন আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন বলে তদন্ত কর্মকর্তারা জানান।

মুক্তিযুদ্ধের সময় করিমগঞ্জের আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ২০১০ সনের ২ মে মামলা করেন নিহতের ছেলে গোলাপ মিয়া।

পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান ও সমন্বয়ক আইজি এম সানাউল হক একাধিকবার ওই এলাকা পরিদর্শন করে তদন্ত করেন।