তারা বলেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করা হবে।
সোমবার দুপুরে চট্রগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
এছাড়াও লতিফ সিদ্দিকীর দেশে ফেরার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সারা দেশে বিক্ষোভের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, “হেফাজতের কেন্দ্রীয় আমির আল্লামা শাহ আহমেদ শফির সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠকে সময় বেঁধে দিয়ে হরতাল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
বৈঠকে সংগঠনের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী সহ উর্ধ্বতন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট লতিফ সিদ্দিকীর গ্রেপ্তারের দাবিতে জোহর নামাজের পর লালবাগের গোর-এ-শহীদ মাজারের কাছ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি এতিমখানা হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সামনে দিয়ে লালবাগের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকেশ্বরী মোড়ে সংগঠনের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসির দাবি জানিয়ে আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রেপ্তারে সময় বেঁধে দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, লতিফকে বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি পূরণ না হলে আগামী ৫ ডিসেম্বর কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে।
বেলা ২টার দিকে পল্টনের কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব ঘুরে বায়তুল মোকাররমে গিয়ে তাদের বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়। দুইশর মতো নেতাকর্মী মিছিলে ছিলেন। এ সময় ওই এলাকায় আধাঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
রোববার রাতে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে লতিফ সিদ্দিকী দেশে ফেরেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তিনি একটা সাদা প্রাইভেটকারে করে চলে যান।
গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে এক সভায় হজ নিয়ে বক্তব্যের জেরে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন লতিফ সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য পদ থেকেও তাকে সরানো হয়।
হজ নিয়ে মন্তব্যের জন্য ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে ওই অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেছিলেন, “আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীর যতটা বিরোধী, তার চেয়ে বেশি হজ আর তাবলিগের বিরোধী। ”
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ায় দেশের অর্থ আর শ্রম শক্তির ‘অপচয়’ হয়। তার এই বক্তব্য প্রচার হলে তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
বিভিন্ন ইসলামী দল লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি তোলে। তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায় বিএনপি। বিভিন্ন স্থানে এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলাও হতে থাকে।