সড়ক দুর্ঘটনায় দোষীদের সাজা আবার ৭ বছর

সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে দণ্ডবিধি সংশোধন করে সড়ক দুর্ঘটনার মামলায় সাজা কমানোর সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছে হাই কোর্ট ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2014, 06:59 AM
Updated : 20 Nov 2014, 10:46 AM

ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় দোষ প্রমাণিত হলে আগের মতোই সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান বহাল হবে বলে জানিয়েছেন এ মামলার আইনজীবীরা।   

একটি রিট মামলার নিষ্পত্তি করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।

রায়ে বলা হয়, এই সংশোধনী বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

১৯৮৫ সালে তখনকার এরশাদ সরকার দণ্ডবিধির ৩০৪ (বি) ধারা সংশোধন করে সড়ক দুর্ঘটনার মামলায় সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর কারাদণ্ড থেকে কমিয়ে তিন বছর করে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে এই রিট মামলা করেন।

এর প্রাথমিক শুনানি করে ২০১১ সালের ৪ জানুয়ারি হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের বেঞ্চ একটি রুল দেয়।

শুনানিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, ১৯৮৫ সালে ফৌজদারি কার্যবিধির ৭ কলামের ১১ শিডিউল এবং দণ্ডবিধির ৩০৪ বি ধারা সংশোধন করে সাজার মেয়াদ ৭ বছর থেকে কমিয়ে ৩ বছর করা হয়। সাজার মেয়াদ কমানোর ফলে দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে।

“বর্তমানে সড়কে নাগরিকদের জীবন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এই সংশোধনী সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।”

অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে দুর্ঘটনায় চালকের দায় প্রমাণিত হলে ১০ বছরের বেশি কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে জানিয়ে এই আইনজীবী বলেন, এর ফলে সেখানে দুর্ঘটনা কম হয়।

“কিন্তু আমাদের দেশে সাজার পরিমাণ কম হওয়ায় সড়ক নিরাপদ নয়। সাজার মেয়াদ বাড়ানো দরকার।”

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত ওই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করায় এখন সাত বছর সাজাই বহাল হবে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় এই সাজাও যথেষ্ট নয় বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছে আদালত।”

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. খোরশেদুল আলম বলেন, আদালত সাজা কমানোর সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি বর্তমান সাজাও বাড়ানো উচিত বলে মত দিয়েছে।