গত শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলনের একটি ছবি তার ফেইসবুকের ওয়ালে শেয়ার করেন তার ছেলে সৌমিন শাহরিদ জেভিন।
Published : 18 Nov 2014, 12:19 PM
খালি গায়ে সাদা ধুতির সঙ্গে রূদ্রাক্ষের মালা। আলো-আঁধারিতে লালনভক্ত শফিউলের বই পড়ার সেই ছবি কিছুক্ষণ পর তার ফেইসবুকের প্রোফাইল পিকচার করা হয়।
শফিউল না থাকলেও শিক্ষার্থী, বন্ধু আর ভক্তদের নানা মন্তব্যে তার ফেইসবুক পৃষ্ঠাটি এখনো সরব। সেখানে শোক এসেছে, এসেছে প্রতিবাদ।
মুরশেদা মুক্তি নামের একজন শফিউলের ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছেন, “কাল স্যারের ক্লাস আছে। ক্লাস আছে, ছাত্র আছে। নেই শুধু স্যার। উই মিস ইউ স্যার।”
বাবার ঘাড়ে হাতরাখা একটি ছবির পাশে জেভিন ইংরেজিতে লিখেছেন, “বাবা তোমাকে ছাড়া কীভাবে আমি বেঁচে থাকব? আমি বিচার চাই। এ কারণেই আমি বাঁচতে চাই।
চিশতী নাজমুল নামের একজন শফিউলের ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছেন, “আজ সোমবার এই দিনে স্যারের বাসায় সাধুসঙ্ঘ হতো। কিন্তু আজ আর হবে না...তাই স্যারের সাথে আমার দেখাও হবে না...। আজ সকাল থেকে তাই খুব কষ্ট পাচ্ছি...।”
শফিউলের সঙ্গে একটি গ্রুপ ছবি পোস্ট করে তাহমিনা পারভিন লিখেছেন, “আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এমএসএস ৮৭ ব্যাচের বন্ধুরা... বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার ২২ বছর পর আবার একসাথে হয়েছিলাম।”
“কত আড্ডা, কত গল্প, কত স্মৃতিচারণ, কত আনন্দ...! হয়তো আবার আমরা একসাথে হব কিন্ত তোমাকে কোথায় পাব লিলন? এতো নিষ্ঠুরভাবে তোমাকে চলে যেতে হবে তা তোমার কোনো বন্ধুই মন থেকে মানতে পারছি না।”
জহিরুল ইসলাম লিখেছেন, “স্যার আপনাকে এভাবে বিদায় বলতে হবে ভাবিনি আমরা কেউ। দেখা হবে পরপারে।”
মাকসুদ হাসান লিখেছেন, “স্যার কেন এভাবে চলে গেলেন। কাঁদিয়ে গেলেন আমাদের সবাইকে।”
মিঠু আমিন লিখেছেন, “স্যার কখনোই আপনাকে ফেইসবুকে দেখতে পাব না। আপনার কোনো স্ট্যাটাসও পড়তে পারব না। শুধুই ঘুমন্ত...!”
শফিউল হত্যার বিচারের দাবি নিয়ে তারই ফেইসবুকের পাতায় এসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নিবন্ধক আব্দুস সালাম।
তিনি লিখেছেন, “আমরা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। ঘাতকদের শাস্তি চাই।”
রাজশাহীর দুর্গাপুরের কানপাড়ার সামছুল ফকির বলেন, “প্রতি সোমবার সন্ধ্যার গানের আসরে শফিউল প্রায়ই নিষ্ঠার সঙ্গে বলতেন, লালন ধর্ম ছাড়া আত্মার কোনো মুক্তি নেই।”
এর আগে গত ২৬ মে নিজের যে ছবিটি শফিউল ফেইসবুকে প্রোফাইল পিকচার করেছিলেন, তাতেও তাকে দেখা যায় বাউল বেশে।