বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ২ সে.মি., ধরলা নদীর ফেরী ঘাট পয়েন্টে ৬ সে.মি. এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে দুধকুমার নদীর পানি ২ সে.মি. হ্রাস পেয়েছে।
তবে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে জেলার চল্লিশ ইউনিয়নের দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে তলিয়ে গেছে ১৫ হাজার হেক্টর জমির আউশ, আমন, বীজতলা ও শাকসবজির ক্ষেত।
নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজালাল উদ্দিন মোল্লা জানান, এই ইউনিয়নের ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদী ভাঙ্গনে নি:স্ব হয়েছে অন্তত: ৩০টি পরিবার।
বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন চাঁদ জানান, তার ইউনিয়নে ৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হাসান আব্দুর রহিম খোকা জানান, দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। পুরো এলাকা প্লাবিত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে।
পাহাড়ি ঢলের কারণে দুধকুমার নদের অব্যাহত ভাঙ্গনে বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর সেতুর সংযোগ হুমকির মুখে পড়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে জামালপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার জেলার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি আরো ২ সে.মি. বেড়ে বিপদ সীমার ৩৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যায় জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ি উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের এক লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ইসলামপুরের টিনাডুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জানান, ইউনিয়নের সিংভাঙা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০০ মিটার ভেঙে নদীতে বিলীন হয়েছে। ওই এলাকার রাস্তাঘাটও হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বন্যার্ত এলাকার পানিবন্দি লোকজন বিভিন্ন বাঁধ ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।