চৌহালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার মিটুয়ানী বাজার নৌকা ঘাট এলাকার এই দুর্ঘটনা ঘটে।
উপজেলা সদরের মিটুয়ানী বাজার ঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি সকালে চর সলিমাবাদ ঘাটে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। কিন্তু ঘাটের কাছে নদীর মধ্যে একটি ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগলে নৌকাটি ডুবে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল লতিফ জানান, নৌকাডুবির পর অনেকে সাঁতরে তীরে উঠলেও বেশ কয়েকজন নদীর স্রোতে ভেসে যান।
স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ঘটনার পরপরই নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। বিকাল ৩টায় ঢাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যের একটি ডুবুরি দল তল্লাশিতে যোগ দেয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলোর মধ্যে একই পরিবারের দুইজন রয়েছেন।
এরা হলেন- খাসকাউলিয়া গ্রামের আক্তার হোসেন (৪২)ও তার স্ত্রী দিলু আক্তার (৩৫)। আক্তারের এক ভাবীর লাশও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানালেও তার নাম জানাতে পারেননি আবদুল্লাহ।
বাকিরা হলেন- খাসপুকুরিয়া গ্রামের আমজাদ আলীর মেয়ে আঞ্জুমান আরা (৩৫), একই গ্রামের হালিমের মেয়ে রাশেদা (২৫) এবং খাসকাউলিয়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের মেয়ে আঙ্গুরী (১৮)।
এছাড়া মধ্যখাসকাউলিয়ার সাইফুল ইসলামের স্ত্রীও নদীতে ডুবে মারা গেছেন বলে স্থানীদের বরাত দিয়ে জানান আবদুল্লাহ।
প্রাথমিক উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানান, তিনি নিজে একজন নারীর লাশ নদী থেকে তুলে এনেছেন। আরেকটি লাশ খুঁজে পেলেও স্রোতের কারণে তুলতে ব্যর্থ হন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম এবং টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মাহাবুবের রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বিল্লাল হোসেন বলেন, “জেলা প্রশাসনের কাছে চারটি লাশ রয়েছে। তবে প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে ঘণ্টা দেড়েক সময় লেগেছে। এর মধ্যে আরো কয়েকজনের লাশ পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গেছেন বলে শোনা গেছে। তবে আমাদের হাতে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
বিকাল ৫টা পর্যন্ত আট-দশজন নিখোঁজ ছিলেন বলেও জেলা প্রশাসক জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিকুল বলেন, “একেকজন একেক কথা বলছে। তবে আমরা আশঙ্কা করছি, দশ থেকে পনের জন নিখোঁজ থাকতে পারে।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক জানান, নিহতদের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দশ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
উদ্ধার অভিযান জোরদার করতে নৌবাহিনীর কাছেও ডুবুরি চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।