শনিবার ‘চা-বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রথম আলোর আন্তর্জাতিক খবরের পাতা ‘সারাবিশ্বে’ ভারতের হবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বুলেট পয়েন্ট জীবনী ছাপা হয়।
এর একটি অংশে বলা হয়, “মোদি আরএসএসের ‘প্রচারক’ হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর।”
ওই নিবদ্ধের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক তোপের মুখে পড়ে প্রচার সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এই দৈনিকটি।
প্রথম আলোর ওই লেখার স্ক্রিনশট ফেইসবুকে শেয়ার করে জয়দেব নন্দী নামে এক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট লিখেছেন, “'প্রথম আলো' আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকেও অস্বীকার করলো? আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে 'গুন্ডে' সিনেমার মতো পাক-ভারত যুদ্ধ বলে চালানো শুরু করে দিলো? তাহলে এই অবস্থা?”
নাসিম রূপক ফেইসবুকে লিখেছেন, “১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হিসাবে আখ্যায়িত করে মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা করলো প্রথম আলো।”
জয়দেব নন্দীর স্টাটাসে করা মন্তব্যে খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন, “৭১'র পাক-ভারত যুদ্ধ বলে যারা বলছেন তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া জরুরি। এটা বলে প্রকারান্তরে তারা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেন।”
রোববার পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে ওই কথাটি বদলে দেয়ার পাশাপাশি প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণে বার্তা সম্পাদকের পক্ষে একটি ব্যাখা ছাপা হয়।
ব্যাখ্যায় বলা হয়, “চা-বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে গতকাল শনিবার প্রথম আলোর পৃষ্ঠা ৭-এ (সারা বিশ্ব) প্রকাশিত প্রতিবেদনে নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি ‘আরএসএসের প্রচারক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর।
“প্রতিবেদনটির তথ্যের উৎস ছিল বার্তা সংস্থা আইএএনএস৷ তাই প্রতিবেদনে সূত্রের তথ্য হুবহু রাখা হয়৷”
সূত্রের দোহাই দেয়া হলেও ওই লেখাটির কোথাও সূত্রের উল্লেখ ছিলো না।
প্রথম আলোর ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়, “১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। হয়তো সে কারণে নিজস্ব প্রেক্ষাপটে কোনো কোনো বিদেশি সংবাদমাধ্যম কখনো কখনো একে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধও বলে থাকে৷ কিন্তু ১৯৭১ সাল বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের বছর হিসেবেই সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত৷”
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘গুন্ডে’ তে মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বলে উল্লেখ করায় সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সমালোচনার মুখে পড়েছিলো ভারতীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যশরাজ ফিল্মস। পরে এর জন্য ক্ষমা চাওয়া হয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি পক্ষ থেকে।