মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ওই শিক্ষককে এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা, এক কর্মচারীকে বরখাস্ত এবং এক কর্মকর্তার পদ অবনতির সিদ্ধান্ত হলে তা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাছির উদ্দিনকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবি ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দিয়েছে তারা। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক মো. ইসফাকুল হোসেন জানান, মঙ্গলবার বিকেলে শুরু হওয়া সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় দুটো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে লোকপ্রশাসন বিভাগের কর্মচারী আবু সালেহকে স্থায়ী বরখাস্ত, ওই বিভাগের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আতিকুর রহমানের পদ অবনতি এবং সহকারী অধ্যাপক নাছির উদ্দিনকে এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এরপর প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
প্রায় আধা ঘণ্টা বিক্ষোভের পর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধরা।
এক পর্যায়ে উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়া, নিবন্ধক মো. ইসফাকুল হোসেন, প্রক্টর হিমাদ্রী শেখর রায়সহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত শোনান।
শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে সহকারী অধ্যাপক নাছির উদ্দিনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ঘোষণা দেয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র শরিফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “সিন্ডিকেটের পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও কেন তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হল না তা আমাদের বোধগাম্য নয়।”
ওই শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নাছির উদ্দিনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা না হলে ক্যাম্পাসে লাগাতার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয় শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া বুধবার সকাল থেকে লোকপ্রশাসন বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় তারা।
গত ২৯ মার্চ লোকপ্রশাসন বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করেন ওই বিভাগের কর্মচারী আবু সালেহ। এরপর ওই ছাত্রীকে নিয়ে নানা কটূক্তি করেন সহকারী অধ্যাপক নাছির উদ্দিন। পরদিন তাদের দুজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
এছাড়া চতুর্থ বর্ষের শিক্ষা সফরে শিক্ষক নাছির উদ্দিন, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আতিকুর রহমান ও কর্মচারী আবু সালেহ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করেন বলে গত ৮ এপ্রিল ওই বর্ষের আট ছাত্রী অভিযোগ করেন।
এরপর ঘটনা খতিয়ে দেখতে দুটি কমিটি করে প্রশাসন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এরইমধ্যে লোক প্রশাসন বিভাগের প্রধান আনোয়ারা বেগম পদত্যাগ করেছেন।