শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণের মধ্যে কয়েকটি স্থানে গোলযোগ হলেও তা ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছেন, “বিরাট এ নির্বাচনে কিছু এলাকায় ছোটোখাটো সহিংসতা-গোলমাল হয়েছে। এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সার্বিকভাবে সুন্দরভাবে ভোট এগিয়ে চলছে।”
ভোটগ্রহণ চলাকালে বিএনপির অভিযোগের মধ্যে দুপুরে তার এই বক্তব্যের পর সন্ধ্যায় আরেক কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, হাজার শুকরিয়া। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে সুন্দরভাবে নির্বাচন হয়েছে।”
আগের দুই পর্বের নির্বাচনে জয়ের পাল্লা ভারী করা বিএনপির অভিযোগ, প্রশাসনের মদদে তৃতীয় পর্বে ভোটকেন্দ্র দখলের ‘মহোৎসব’ হয়েছে।
তাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ বলেছে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। প্রশাসন নিরপেক্ষ ছিল বলে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থীরাও ছাড় পাননি।
ভোটের মধ্যে ব্যালট ছিনতাইয়ের সময় শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। বাগেরহাটে এক প্রার্থীর সমর্থকের লাশ পাওয়া গেছে সকালে।
যশোরের মনিরামপুর, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, শরীয়তপুরের নড়িয়া, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও কচুয়া, ফেনীর দাগনভূঞা, ভোলা সদর, কুড়িগ্রাম সদরে ব্যালট পেপার ছিনতাই ও পোড়ানো হয়েছে।
প্রথম দফা নির্বাচনে গোলযোগ তেমন না দেখা গেলেও দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচনে বেশ কয়েকটি স্থানে সংঘাত-সংঘর্ষ হয়, যাতে একজন মারাও যান।
তৃতীয় পর্বের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যালট ছিনতাইয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, “বিরাট একটা নির্বাচনে সামান্য সহিংসতা হয়েছে। বিবদমান গ্রুপের কারণে ছোটোখাটো এ বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়। সমস্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে “
বিদেশে থাকা সিইসির অনুপস্থিতিতে ভোট তদারকের দায়িত্বে থাকা আবদুল মোবারক বলেন, “পাড়ায় পাড়ায় বা দলীয় দন্দ্বে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। এজন্য নির্বাচনও বন্ধ করতে হয়েছে। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ হয়েছে।”
সহিংসতা ও গোলযোগের জন্য নির্দলীয় এ নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করলেও এর দায় কারো ওপর দিতে রাজি নন তিনি।
ইসির কঠোর সমালোচনায় বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, “ওরা একেক সময় একেক কথা বলে। তারা বলতে থাকুন। আমরা আমাদের কাজ করব।”
বাংলাদেশের নির্বাচনে সহিংসতার ইতিহাস তুলে ধরে এবারের নির্বাচনে তার মাত্রায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনাররা।
মোবারক বলেন, “সহিংসতাবিহীন নির্বাচন হতে অনেক সময় লাগবে। একদিন হয়ত সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন হবে আমাদের দেশে। যখন মানুষের ধ্যান ধারণা আরো পরিশীলিত হয়ে আরো সংযমী হবে, তখন সহিংসতা নাও হতে পারে।”
তৃতীয় পর্বে ৫ হাজার ৪৫৬টি কেন্দ্রে টানা ভোটগ্রহণ চলে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে এসব উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন ১১শ' জনের বেশি।