ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু হতে অন্তত এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে।
Published : 28 Aug 2013, 05:18 PM
নিউইয়র্কে পুনরায় ফ্লাইট শুরু করতে গত ১৭ অগাস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত আকাশ বিমান চলাচল বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করে বাংলাদেশ।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন্স বিভাগের পরিচালক এস এম নাজমুল আনাম বলেন, “এ রুটে পুনরায় ফ্লাইট শুরু করতে এখনো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি টেকনিক্যাল টিম আসার কথা রয়েছে। তারা শাহজালালের নিরাপত্তা ব্যাবস্থাসহ বেশ কিছু বিষয় অডিট করবে।”
“সব কিছু ভালোভাবে শেষ হতে হতে এপ্রিল থেকে জুন সময় লাগবে। তাই বলা যায় এপ্রিলের আগে আসলে ফ্লাইট শুরু করা যাচ্ছে না।”
যুক্তরাষ্ট্রে কোন দেশ বিমান পরিচালনা করতে চাইলে তাকে এফএএ এর ক্যাটাগরি ১ ছাড়পত্র পেতে হয়। সাধারনত এতে নিরাপত্তা বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। মূলত ওই ছাড়পত্রের জন্যই বাংলাদেশের এই অপেক্ষা।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও কানাডার সঙ্গে বিমান চলাচল বিষয়ে চুক্তি হয়েছে।
নাজমুল আনাম বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ফিফথ ফ্রিডম দিয়েছে। সেই সাথে কানাডার সাথে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট করার বিষয়েও চুক্তি হয়েছে। কানাডার সাথে করা চুক্তি অনুসারে আমরা একটি ফ্লাইটের ৩০ শতাংশ যাত্রী নিউ ইয়র্ক থেকে টরেন্টো বহন করতে পারবো। যেটি অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভজনক হবে।”
ক্যাটাগরি ১ এ উন্নীত হওয়ার জন্য বেবিচক সব ধরনের প্রস্তুতি নেবে বলে জানান নাজমুল আনাম।
“আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি। আমরা চেয়েছিলোম অক্টোবরের মধ্যে যেন যুক্তরাষ্ট্রের অডিট দল আসে। কিন্তু তারা আমাদের এখনো স্লট দিতে পারেনি। আসলে জানুয়ারির আগে এফএএ এর অডিট দল আসতে পারবে না। আর ফলাফল পেতে পেতে অন্তত মার্চ তো লাগবেই।”
তিনি বলেন, “আবার অন্য দিকে চিন্তা করলে বিমান তো এখনি ফ্লাইট শুরু করতে পারবে না। তাদের দুটো নতুন উড়োজাহাজ আসছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে। তাই আমরাও তাড়াহুড়া করতে চাই না। পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিতে চাই। তাড়াহুড়া করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।”
বিমানের দেয়া তথ্য মতে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বিমান বহরে যুক্ত হবে দুটি বোয়িং ৭৭৭ মডেলের উড়োজাহাজ। সাধারণত আকাশ পথে লম্বা রুটে যাত্রা করার জন্য এ ধরনের উড়োজাহাজ বেশি উপযোগী।
টরেন্টোতে ফ্লাইট শুরু করার বিষয়ে নাজমূল বলেন, “কানাডা মূলত বিমানকে অডিট করবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক আছে কিনা, উড়োজাহাজগুলো ঠিক আছে কিনা এসব। বিমান অডিটের জন্য প্রস্তুত হলে কানাডাকে চিঠি দেবে, তারপর তারা প্রতিনিধি পাঠাবে।”
পূর্ণাঙ্গ চুক্তি হলে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট, একটি ইন্টারপয়েন্টসহ ঢাকা থেকে টরেন্টো ফ্লাই করবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিমানের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক কেভিন স্টিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমান ইতিমধ্যে আগামী এপ্রিল থেকে নিউ ইয়র্ক ফ্লাইট পরিচালনা করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে, আমরা আশা করি এর মধ্যে আমাদের দুটি নতুন বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ চলে আসবে।”
“আর টরেন্টোতে ফ্লাইট শুরু করার জন্য আমাদের কানাডা পরিদর্শক দলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।”
এ চুক্তির বিষয়কে স্বাগত জানালেও এটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহেদুল আলমের।
তিনি বলেন, “নিউ ইয়র্কে ফ্লাইট চালানো মানে হলো একটি ফ্লাইট করতে অন্তত তিনদিন একটি উড়োজাহাজ অন্য কোন রুটে ব্যাবহার করা যাবে না। তাই আমি মনে করি এ দুটি রুট শুরু করার আগে অবশ্যই বিমানকে বাজার খতিয়ে দেখতে হবে যে এটি আসলে লাভজনক হবে কিনা। আর এ জন্য পেশাদার মানুষ নিয়োগ করতে হবে “
এক সময় নিউ ইয়র্ক রুটে বিমানের ফ্লাইট চললেও ১৯৯৬ সালে এফএএ এর নিষেধাজ্ঞা আরপের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। আর টরেন্টো রুটে এবারই প্রথম ফ্লাইট শুরু হচ্ছে।