পটুয়াখালী উপকূল অতিক্রম করছে মহাসেন

ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগের ঝড়োহাওয়া নিয়ে পটুয়াখালী উপকূল অতিক্রম শুরু করছে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2013, 10:22 PM
Updated : 15 May 2013, 10:45 PM

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের বর্ধিতাংশ পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় আঘাত হেনেছে। ধীরে ধীরে তা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করবে।”

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, সকাল ৯টায় মহাসেন চট্টগ্রাম থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিম, কক্সবাজার থেকে ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিম এবং মংলা থেকে ২১০ কিলেমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এটি উপকূল ঘেষে আরও উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে দুপুর নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে  পারে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১শ’ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বের জেলাগুলোতে প্রবল দমকা বাতাসের সঙ্গে চলছে বৃষ্টি।   ঝড়ের বর্ধিতাংশের প্রভাবে বাতাসের বেগ বাড়তে থাকায় পটুয়াখালীতে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ নেই পটুয়াখালী, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায়।

ভোলার লালমোহন উপজেলায় গাছ ভেঙে পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর দিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

সাগরের পানি ফুলে ফেঁপে ওঠায় উপকূলীয় জেলাগুলোর অনেক নিচু এলাকা তালিয়ে গেছে দুই থেকে তিন ফুট পানির নিচে। তবে এসব এলাকার প্রায় দশ লাখ বাসিন্দাকে বুধবার রাতেই সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন । 

চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে আগের মতোই ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর মংলা বন্দরকে দেখাতে বলা হয়েছে ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে বেড়ে ৯০ কিলোমিটারে উঠছে। ঝড়ের কেন্দ্রের কাছে সাগর রয়েছে উত্তাল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ১২০ কিলোমিটারের বেশি হলে মহাবিপদ সঙ্কেত দেয় আবহাওয়া বিভাগ। আবহাওয়াবিদ শাহ আলমের ধারণা, ঝড়টি উপকূল অতিক্রমের সময় ১০০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

ঝড়ের সময় ৮-১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে।

উপকূলীয় জেলা  কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী,  চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল জেলা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর সঙ্কেতের আওতায় রয়েছে।

পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে পাঁচ নম্বর সঙ্কেত প্রযোজ্য হবে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার পরও ঝড় পুরোপুরি সরে না যাওয়া পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।