জিয়া এতিমখানা মামলা: ১১ সাক্ষীকে পুনরায় জেরার আবেদন নাকচ

জিয়া অরফানেজ (এতিমখানা) দুর্নীতি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১১ সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2017, 04:57 PM
Updated : 27 July 2017, 04:57 PM

খালেদার আবেদন নাকচ করে বৃহষ্পতিবার ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান আগামী ৩ অগাস্ট মামলাটির পরবর্তী শুনানির তারিখ ঠিক করেন।

এদিন মামলার ৫, ৬, ৭, ৮, ১৫, ১৬, ২২, ২৩, ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর সাক্ষীকে নতুন করে জেরা করতে আলাদা তিনটি আবেদন করেন খালেদার আইনজীবীরা। ‘ন্যায়বিচারের’ স্বার্থে ওই সাক্ষীদের নতুন করে জেরা করা প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আবেদনটির বিরোধিতা করে বলেন, এ মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ শুনানি অপেক্ষমান রয়েছে।

“কিন্তু আসামি পক্ষের আইনজীবীরা সে ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তারা সাক্ষীদের পুনরায় জেরার আবেদন করেছেন। তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

মামলার অন্য দুই সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য না দিলে, সাফাই সাক্ষ্যের কার্যক্রম শেষ করে আগামী রোববার থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কাজ শুরু করতে বলেন দুদকের এই আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে আত্মপক্ষ শুনানি এবং দুই আসামি সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষীর দিন নির্ধারিত ছিল। এছাড়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক নূর আহমেদকে খালেদা জিয়ার পক্ষে জেরার তারিখ ছিল।

এদিন শুধু ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ নিজের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন।

খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হননি।

খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী নূরুজ্জামান তপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুটি মামলাতেই সময়ের আবেদন করা হয়।

“উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক খালেদা জিয়ার পক্ষে সময়ের আবেদন মঞ্জুর করলেও সাক্ষীদের পুনরায় জেরার আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়ে সময় আবেদন করা হলে আদালত দুটি মামলারই পরবর্তী শুনানির তারিখ ৩ অগাস্ট ঠিক করেন।”

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১১ সালের ৮ অগাস্ট খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান এ মামলার আসামি।

অন্যদিকে এতিমদের জন্য দেশের বাইরে থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করে দুদক।

এ মামলায় ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, কাজী সালিমুল হক কামাল, শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

মামলা দুটিতে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন হয়।