সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মধ্যে ক্রেতার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট বিক্রয়কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইনফিনিটি মেগা মল।
বৃহস্পতিবার রাতে হয়রানির শিকার হাসান মাহমুদ তুষার নামে একজন ফেইসবুকে লেখেন, কেনার আগে পোশাক পরে দেখার (ট্রায়াল) জের ধরে ইনফিনিটির বিক্রয়কর্মীরা তাকে মারধর করেন।
“আজকে ফ্যামিলিসহ নিজেই এই ঘটনার শিকার হয়ে এলাম।....কাস্টমাররা বাধা দিতে এলে ম্যানেজারসহ ১২/১৩ জন সেলসম্যান কাস্টমারদের গায়ে হাত তোলে। শেষপর্যন্ত ম্যানেজার, সেলসম্যান এবং সিকিউরিটির লোকজনের তোপের মুখে পড়ে কোনো ধরনের বিচার ছাড়াই আমাদের বাসায় ফিরে আসতে হয়েছে।”
ঈদবাজারে তার কথা ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ইনফিনিটি মেগা মলের ফেইসবুক পাতায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়, সেই সঙ্গে পুরো ঘটনার দায় অস্থায়ী ও খণ্ডকালীন কর্মীদের উপর চাপানো হয়।
শুক্রবার দুপুরে ইনফিনিটির বসুন্ধরা শাখার ব্যবস্থাপক আনোয়ার খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগের দিন রাত ১১টার দিকে কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে একজন বিক্রয়কর্মীর বাগ-বিতণ্ডা হয়, পরে তা মারামারিতে রুপ নিয়েছিল।
“একজন ক্রেতা একটি সাদা পাঞ্জাবি ৩-৪ বার ট্রায়াল দেন, ফলে ময়লা হয়ে যাওয়ার কারণে বিক্রয়কর্মী তাকে অন্য একটি রঙিন পাঞ্জাবি ট্রায়াল দিতে বললে এ ঘটনা ঘটে।”
“দুই পক্ষই টেম্পারড ছিল, অনেক শাউট হচ্ছিল; ঘটনা শুনে গিয়ে দেখি দুইপক্ষের মধ্যেই মারামারি চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমি দুই পক্ষকেই সরিয়ে দিই।”
“যাই হোক, এটা আমাদের ফল্ট, এজন্য আমরা লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী,” মন্তব্য করে তিনি বলেন, এতে জড়িত খণ্ডকালীন ওই বিক্রয়কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আনোয়ারের বিরুদ্ধেও ক্রেতার সঙ্গে অসদাচারণের যে অভিযোগ তুষার তুলেছেন, তা অস্বীকার করেছেন তিনি।
এদিকে ইন্টারনেটে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে শুক্রবার বিকাল থেকে ইনফিনিটি মেগা মলের ফেইসবুক পাতা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে আগে দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দিয়েছিল তারা।
ওই পোস্টে বলা হয়েছিল, তাদের বসুন্ধরার শাথার অধিকাংশ বিক্রয় প্রতিনিধি নতুন/খণ্ডকালীন/অস্থায়ী। সম্প্রতি ক্রেতার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার অভিযোগ ওঠার অভিযোগটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমলে নেওয়া হয়।
এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত অস্থায়ী বিক্রয় প্রতিনিধিকে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে তাৎক্ষণিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয় ও অভিযোগকারী ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষমা চাওয়া হয় বলে ওই পোস্টে বলা হয়।
ফেইসবুক পাতা বন্ধের বিষয়ে বিকালে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে আনোয়ার খানের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে তুষার শুক্রবার বিকালে এক স্ট্যাটাসে লিখেন, “আমার দুলাভাই বাসায় এসে তাদের এমডিকে ফোনে পুরো ঘটনা জানান। তাদের এমডি আমার বোনকে কয়েক ঘন্টা পর ফেইসবুকে সরি বলে একটা মেসেজ দেয় এবং সেলসম্যানের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানান।”
তবে ব্যবস্থাপকের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না দেখে অসন্তোষ জানিয়েছেন তুষার। তিনি মনে করেন, ইনফিনিটির দুঃখ প্রকাশ কেবল ‘ব্যবসা বাঁচানোর জন্য'।