জেলাটি বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ‘হয়রানিমূলক মিথ্যা’ মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জকে এভাবে চলতে দেওয়া যায় না মন্তব্য করে খুশি কবির বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি পরিবার যা বলবে তাই করবে, যা ইচ্ছা তাই করবে।এটা হয় না।
“বাংলাদেশের কোনো আইন, নিয়ম, বিধান কোনো কিছু সেখানে চলে না।নারায়ণগঞ্জ কি তবে বাংলাদেশের অংশ না?”
ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় সংবাদ শিরোনাম হওয়া নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে এক ঘুষের মামলায় গত বুধবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসা শ্যামল কান্তি ভক্ত সাংবাদিকদের বলেন, তাকে চাপে রাখতে ‘প্রভাবশালী এক ব্যক্তির (সেলিম ওসমান) নির্দেশে ষড়যন্তমূলকভাবে’ ওই মামলা করা হয়েছে।
খুশি কবির বলেন, “নারায়ণগঞ্জের ব্যাপারে বারবার দাঁড়ানো হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে একটি পরিবারের নাম বারবার চলে আসছে। ওসমান পরিবারটি কীভাবে রাষ্ট্রের আইন, বিধান সবকিছুর ঊর্ধ্বে থাকতে পারে? ”
ওসমান পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর আশির্বাদপুষ্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- শামীম ওসমান তার পরিবারের সমতুল্য, পরিবারের একজন।
“শামীম ওসমানকে তিনি স্নেহ করেন, পছন্দ করেন। তবে এভাবে তো রাষ্ট্রকে, শহরকে জিম্মি রাখতে পারেন না। একটি শহর একজন ব্যক্তির ইঙ্গিতে চলবে, এটা তো চলতে দেওয়া যাবে না।”
‘ছাত্র-শিল্পী-লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মী ও নাগরিকবৃন্দের’ ব্যানারে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, গুম-খুন ও লুটপাটের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জকে ক্রমেই একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত করার চেষ্টা চলছে।
অন্যদের মধ্যে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শেখ বাতেন, প্রকাশক রবীন আহসান, ‘সাহস’র সম্পাদক শাকিল অরণ্য, কবি হালিম আজাদ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক মারুফ রসুল ও লেখক দীপংকর গৌতম সমাবেশে বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও ক্ষেতমজুর সমিতি সমাবেশে সংহতি জানায়।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যাণদীতে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে গত বছরের ১৩ মে তারই স্কুলে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে শারীরিক নির্যাতন ও কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনা ঘটে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের নির্দেশে।
এরপর ২৭ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, এক ছাত্রকে মারধর এবং এক শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে তিনটি মামলার আবেদন নারায়ণগঞ্জের আদালতে জমা পড়ে।
প্রাথমিক শুনানি করে আদালত প্রথম দুটি মামলার আবেদন খারিজ করে দিলেও ঘুষের অভিযোগের বিষয়টি বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়।
এ মামলার বাদী পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের অভিযোগ, চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে ২০১৪ সালে তার কাছ থেকে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি তা করে দেননি।