শাস্তি মওকুফের আশ্বাস, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ‘উঠছে’

স্বাস্থ‌্যমন্ত্রী শাস্তি মওকুফের আশ্বাস দেওয়ার পর গত পাঁচ দিন ধরে চালিয়ে আসা কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত‌্যাহার করে নিয়েছেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2017, 07:06 AM
Updated : 6 March 2017, 08:33 AM

সোমবার ঢাকার ধানমন্ডিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বাসায় চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা পরীক্ষিৎ চৌধুরী জানান।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন এ বৈঠকে।

পরীক্ষিৎ চৌধুরী বলেন, “ইন্টার্ন চিকিৎসকরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভবিষ‌্যতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। তারা সাজা মওকুফের আবেদন করলে মন্ত্রী বলেছেন, ‘তারা আমার সন্তানের মত’। তিনি শাস্তি তুলে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এবং দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন।”

বৈঠকের পর স্বাচিপ সভাপতি ইকবাল আর্সলান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মন্ত্রী বলেছেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চিকিৎসকদের পাশে আছেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশেও তাকে থাকতে হয়। 

“তিনি বলেছেন, ‘সিদ্ধান্ত (শাস্তির) বাতিল করা হল, তোমরা রোগীর পাশে থাক। আমি খবর পেয়েছি, ইতোমধ‌্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট প্রত‌্যাহার করে নিয়েছেন।”

সোমবার বগুড়া মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের মিছিল

যেখান থেকে আই আন্দোলনের সূত্রপাত, সেই বগুড়ার স্বাচিপ সভাপতি সামির হোসেন মিশু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা শুনেছি শাস্তি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে বিস্তারিত বলতে পারছি না।”

সিরাজগঞ্জ সদর থেকে বগুড়া হাসপাতালে এক রোগীর ছেলে ও দুই মেয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হলে ঘটনার সূত্রপাত।

এ ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর ২ ফেব্রুয়ারি চার ইন্টার্ন চিকিৎসককে শাস্তির ঘোষণা আসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে। ওই চারজনের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।

এরপর শনিবার বগুড়ার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, খুলনা মেডিকেল কলেজ ও সিরাজগঞ্জের নর্থবেঙ্গল মেডিকেল কলেজে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।

ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও রোববার কর্মবিরতি শুরু হয়। কর্মবিরতির পাশাপাশি তারা মানববন্ধন করে সহকর্মীদের শাস্তির প্রতিবাদ জানায়।

এর ফলে ওই সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়, দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের।

রংপুর মেডিকেল কলেজ ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ফারহান রহমান বলছেন, “শাস্তি প্রত্যাহারের খবর শুনেছি। ঢাকায় বিএমএর মিটিং চলছে। মিটিং শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে।”