শাস্তির পরে বগুড়া মেডিকেলে নেই ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

এক রোগীর স্বজনকে মারধরের ঘটনায় চার সহকর্মীকে শাস্তি দেওয়ার পর থেকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাজ করছেন না শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2017, 05:52 PM
Updated : 2 March 2017, 08:17 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের শাস্তির ঘোষণা আসার পর থেকেই হাসপাতালে কোনো শিক্ষানবিশ চিকিৎসক নেই বলে নার্সরা জানান।

রাত সাড়ে ১০টায় হাসপাতালে গিয়ে কোনো শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে দেখা যায়নি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করছিলেন সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা।

মেডিসিন ওয়ার্ডের ৪৮২ নম্বর কক্ষে দায়িত্বরত নার্স মারুফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দুপুরের পর থেকে আর হাসপাতালে আসেননি।

মেডিসিন ওয়ার্ডের ইনচার্জ নার্স হোসনে আরাও একই কথা বলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের উপ-পরিচালক নির্মূলেন্দু চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ব্যাপারে কাল কথা বলব।”

ওই ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি এমএ আল মামুন বলেন, “জানেন না ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাজাপ্রাপ্ত চারজনসহ শিক্ষনবিশ চিকিৎসকরা দুপুরে তাদের হোস্টেলে বৈঠক করেন। ওই সভায় তারা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন।

সিরাজগঞ্জ সদর থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আলাউদ্দিন সরকার নামে এক রোগীর ছেলে রউফ সরকার গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হন।

তার অভিযোগ, তিনি ফ্যান বন্ধ করার জন্যি সুইচ খুঁজে না পেয়ে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করলে তিনি রেগে যান। এরপর আরেকজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এসে তাকে মারধর করেন এবং অন্য  একটি কক্ষে নিয়ে কান ধরে উঠবস করান।

মারধর ও কান ধরিয়ে উঠ বস করানোর ওই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসকদের নিয়ে সমালোচনা ওঠে। ওই ঘটনার পর শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা করলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।

পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। ওই কমিটি প্রতিবেদনে চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে চিহ্নিত করে ব্যরবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।

এই প্রেক্ষাপটে ওই চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মেয়াদ শেষে এই চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে চারটি ভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে।

আল মামুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে,  নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, মো. আশিকুজ্জামান আসিফকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং  মো. কুতুবউদ্দিনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে।

ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ করলে তাদের পেশাগত সনদ বাতিল করা হবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।