প্রতিষ্ঠানটির ২০১৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে বলে রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
সোমবার দুদক চেয়ারম্যান বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদনটি পেশ করতে গেলে এর বিভিন্ন দিক তুল ধরেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন।
তিনি বলেন, “চেয়ারম্যান কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন এবং প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।”
প্রতিবেদনে কমিশন প্রস্তাবিত সাতটি ক্যাটাগরিতে ৩২ দফা সুপারিশের কথা দুদক চেয়ারম্যান রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, এর মধ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা প্রদানে ব্যর্থ হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জরিমানার ব্যবস্থা করার বিষয়টি হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর অধীনে পরিচালিত রাষ্ট্রের স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সংবিধিবদ্ধ দুর্নীতি প্রতিরোধক ও দুর্নীতি শনাক্তকারী সংস্থা দুদক প্রতিবছর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন পেশ করে থাকে।
তাদের প্রতিবেদনে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সেবার মান বাড়ানোসহ দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশে সুপারিশ করা হয়ে থাকে।
এবার অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, ভূমি প্রশাসনের দুর্নীতি রোধকল্পে ভূমি প্রশাসন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন ও ভূমি জরিপের কাজ একই অফিসের মধ্যে সম্পাদন করা; বিদ্যুৎ-গ্যাস-টেলিফোন বিল একই স্থান থেকে প্রদানের ব্যবস্থা করা; প্রতিটি অফিসে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য গণ শুনানি, অডিট রিপোর্ট কার্ড, কমিউনিটি স্কোর কার্ড ও সোশাল অডিট করা।
জয়নাল আবেদীন বলেন, “এছাড়া সরকারি ক্রয় কাজে শতভাগ ই-টেন্ডারিংয়ের আওতায় আনা, টেন্ডার প্রক্রিয়া ও ক্রয় কার্য যথাযথ হচ্ছে কিনা মনিটরিং এর ব্যবস্খা করা, নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে প্রাক্কলনের দায়িত্ব ও বাস্তবায়নকারীর দায়িত্ব পৃথক করার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়।”
“নির্মাণ কাজ শেষে চূড়ান্ত বিল প্রদানের আগে সুবিধাভোগীদের মতামত গ্রহণের সুপারিশও করা হয়েছে।”
সাক্ষাতে দুদক চেয়ারম্যান জানান, কোমলমতি শিশুরা যাতে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য স্কুল পর্যায়ে সারা দেশে ২২ হাজার ‘সততা সংঘ’ গড়ে তোলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটি গড়ে তোলা হবে।
প্রেস সচিব বলেন, “রাষ্ট্রপতি দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এসময় তিনি বলেন, দুর্নীতির মামলা দায়ের ও তদন্ত প্রক্রিয়া যাতে তথ্য ভিত্তিক হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।”
রাষ্ট্রপতি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কেউ যাতে শাস্তি থেকে রেহাই না পায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেন এবং সমাজে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাক্ষাতের দুদক কমিশনার নাসির উদ্দিন আহমেদ, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম এবং দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামালসহ রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।