জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সরাসরি নেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনেও জমা নেওয়ার প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 19 Oct 2016, 10:52 AM
সংসদে জেলা পরিষদ নির্বাচন বিল পাসের দু’সপ্তাহ পর মঙ্গলবার নির্বাচন বিধি ও আচরণবিধি চূড়ান্তে ইসির বৈঠকে প্রার্থীদের জন্য নতুন এ সুযোগ রাখার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ।
নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়ে বিধি প্রণয়নের কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তা চূড়ান্ত করে আগামী সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।”
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় বাধার অভিযোগ করেছিল বিএনপিসহ অনেকগুলো দল।
সে ধরনের ঝুঁকি এড়াতেই এবার জেলা নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার শাহওনেওয়াজ।
“অনেকেই অভিযোগ করেন প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাধায় তারা মনোনয়ন জমা দিতে পারছেন না। তাদের কথা চিন্তা করে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে সরাসরি জমার পাশাপাশি অনলাইনেও মনোনয়ন জমার বিধান রাখা হচ্ছে।”
তবে বাছাইয়ের সময় প্রার্থীকে অবশ্যই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্রের ‘হার্ড কপি’ জমা দিতে হবে, বলেন তিনি।
বৈঠকে প্রতি উপজেলায় ভোটকেন্দ্র রাখার পক্ষে মত এসেছে বলেও জানান এ কমিশনার।
“উপজেলাগুলোতে ওয়ার্ডভিত্তিক ভোট কেন্দ্র রাখা হবে। স্বল্প সংখ্যক ভোটারের জন্য জেলাকে ১৫টি ওয়ার্ডে ভাগ করে উপজেলা প্রতি দু’টি করে কেন্দ্র রাখা হতে পারে।”
সংসদের গত অধিবেশনে পাস হওয়া ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল, ২০১৬’ অনুযায়ী, এবার থেকে স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন।
প্রতিটি জেলায় ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য থাকবেন।
এর আগে ১৯৮৮ সালে স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে সরকার কর্তৃক নিয়োগ দেওয়ার বিধান ছিল।
২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত জেলা পরিষদ গঠনে নতুন আইন করে। কিন্তু একদশকেও এ সম্পর্কিত বিধিবিধান তৈরি না হওয়ায়
২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদে ‘অনির্বাচিত’ প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। তাদের মেয়াদপূর্তিতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
এখনকার আইন অনুযায়ী, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২৫ বছর বয়সী যে কোনো ভোটার প্রার্থী হতে পারবেন, যদিও ভোট দিতে পারবেন না।
ভোটাধিকার থাকবে কেবল জেলার অন্তর্ভুক্ত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র ও কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের।
এ হিসেবে স্থানীয় সরকারের চার ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬৭ হাজার নির্বাচিত প্রতিনিধি এ নির্বাচনে ভোট দেবেন বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান।