শরীফুলই খুনি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

জঙ্গিরা একেক সময়, একেক জায়গায় একেক নাম ধরে আত্মপ্রকাশ করে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, রাজধানীর মেরাদিয়ায় নিহত শরীফুলই পুলিশের সন্দেহভাজন ব্লগার হত্যাকারী, যার বেশ কয়েকটি নাম ছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2016, 11:30 AM
Updated : 24 June 2016, 11:52 AM

রোববার সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওই যুবকের মৃত্যুর খবর জানানো হয় সাংবাদিকদের। বলা হয়, শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়ায় বাঁশপট্টি এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে ‘সন্ত্রাসীদের’ গোলাগুলিতে নিহত হন ওই যুবক।

পুলিশ নিহত ব্যক্তির নাম ‘শরীফুল’ জানিয়ে তাকে লেখক, ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করে।

তবে দুইদিন পর সোমবার ঢাকায় লাশ নিতে এসে নিহত যুবকের ভগ্নিপতি ও চাচাতো ভাই তার নাম মুকুল রানা বলে জানায়। তারা মুকুল রানার একটি জাতীয় পরিচয়পত্রও সাংবাদিকদের দেখান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার নিজ বাসায় এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “সন্ত্রাসীদের অনেক নাম থাকে। মেরাদিয়ায় নিহত শরীফুলই পুলিশের সন্দেহভাজন ব্লগার হত্যাকারী, যার বেশ কয়েকটি নাম ছিল।

“একেক জন, একেক জায়গায়, একেক সময়, একেক নাম ধরে এরা আত্মপ্রকাশ করে। কাজেই আমাদের কাছে যে নাম তারা স্বীকার করেছে, আমরা সেই নামই প্রকাশ করেছি।”

গত বছর একুশে বইমেলা থেকে অভিজিৎ রায় ও বন্যা আহমেদের বের হওয়ার সময়ে ধারণ করা সিসি ক্যামেরার একটি ভিডিওচিত্রও পুলিশ প্রকাশ করেছে। পুলিশ বলছে, ভিডিওতে ওই দম্পতিকে ‘অনুসরণ’ করতে যে তরুণকে দেখা গেছে, তিনিই শরীফুল; তিনিই ঢাকার মেরাদিয়ায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল (ফাইল ছবি)

তবে লাশ নিতে আসা দুইজন জানান, তাদের মুকুল সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় এসে কী করতেন, কোনো জঙ্গি দলের সঙ্গে তিনি জড়িয়েছিলেন কি না, সে তথ্য পরিবারের জানা নেই।

‘ক্রসফায়ার’ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ক্রয়াফায়ার আমাদের পুলিশরা করে নাই। কারণ, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হল, তাদের থেকে তথ্য নেওয়া এবং তারা যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করতে পারে। কাজেই আমারা সেই জায়গাটিতেই বিশ্বাস করি।

“কাজেই কোনো ক্রসফায়ার আমাদের পুলিশ করেনি। বরং আত্মরক্ষায় কিংবা তাকে ধরতে গিয়ে এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটেছে।”

চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা স্ত্রী হত্যার পর শুরু হওয়া ‘বিশেষ অভিযান’ সফল হয়েছে দাবি করে এবার ঈদ উদযাপন নির্বিঘ্নে হবে বলে আশা প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ঈদের ছুটিতে পুলিশ টহল থাকবে জানিয়ে নগরবাসীকে ব্যক্তিগতভাবেও নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ দেন তিনি।

যেসব বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি সেসব বাড়িতে তা লাগানোর আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এর ভালো ফলাফল আমরা পেয়েছি। কারণ যে সমস্ত জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে সেসব এলাকায় অপরাধ প্রবণতা অনেকখানি কমে গেছে।”

“যারা ছুটিতে বাড়িতে যাবেন। তারা যেন বাসস্থান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে যান। মার্কেটের স্থলে এবং বসতবাড়ির আশপাশ দিয়ে আমাদের পুলিশ টহল দিবে,” বলেন তিনি।