‘ইসলাম বিতর্ক’: প্রকাশকসহ তিনজন রিমান্ডে

‘ইসলাম বিতর্ক’ বই প্রকাশের জন্য তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় লেখক-প্রকাশকসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2016, 12:07 PM
Updated : 16 Feb 2016, 07:01 PM

এই তিনজন হলেন প্রকাশনা সংস্থা ব-দ্বীপের মালিক ও সঙ্কলন গ্রন্থটির সম্পাদক শামসুজ্জোহা মানিক, ছাপাখানা শব্দকলি প্রিন্টার্সের মালিক তসলিমউদ্দিন কাজল এবং ব-দ্বীপের বিপণন শাখার প্রধান শামসুল আলম। শামসুল প্রকাশনা সংস্থাটির মালিক মানিকের ভাই।

সোমবার গ্রেপ্তারের পর তথ্য প্রযুক্তি আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে ওই মামলায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে চেয়ে মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক জাফর উল্লাহ বিশ্বাস।

তদন্ত কর্মকর্তার এই আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম আমিরুল হায়দার তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডের আদেশ দেন বলে আদালত পুলিশের এসআই মাহমুদুর রহমান জানিয়েছেন।

এর মধ্যে শামসুজ্জোহা মানিককে পাঁচ দিন, তসলিমকে দুদিন এবং শামসুলকে এক দিন হেফাজতে রাখতে অনুমতি পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা জাফর বিশ্বাস।

তিনি তিনজনকে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনে বলা হয়, তাদের আর কোন কোন বইয়ে ইসলামকে বিতর্কিত করা হয়েছে, তা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।

প্রকাশক-মুদ্রাকরদের পক্ষে আইনজীবী উদয় কে বসাক ও রফিকুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেছিলেন। তবে সেই আবেদন হাকিম নাকচ করে দেন।

‘ইসলাম বিতর্ক’ বইটিতে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ হানার উপাদান রয়েছে দাবি করে বাংলা একাডেমির সায় নিয়ে সোমবার রাতে একুশের বইমেলায় ব-দ্বীপের স্টলটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

এরপর রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানোর আগে শাহবাগ থানায় সংবাদ সম্মেলন করেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার আব্দুল বাতেন।

ব-দ্বীপ প্রকাশনার বই জব্দ করছে পুলিশ

তিনি বলেন, “গতকাল ৬ কপি বই জব্দ করা হয়েছিল, গ্রেপ্তারের সময় আরও ৭৫ কপি জব্দ করা হয়। আমরা পড়ে দেখেছি, বইটিতে সাংঘাতিকভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।”

এই বই প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রকাশকের কোনো দুরভিসন্ধি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলার কারণ জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “একটি ওয়েবসাইটে এই বইটি অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে, তাই তাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে।”

সোমবার বইমেলায় ব-দ্বীপের স্টলটি বন্ধ করার পর শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা থেকে পুলিশ জানতে পারে যে ‘ইসলাম বিতর্ক’ বইয়ে ইসলাম ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।

এরপর অনুসন্ধান চালিয়ে তারা ‘প্রমাণ’ পাওয়ার পর বাংলা একাডেমির সঙ্গে কথা বলে স্টল বন্ধের ব্যবস্থা নেয়।

অন্যদিকে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ আমাদের বলেছে, ‘ব-দ্বীপ প্রকাশনীর স্টলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে- এমন বই প্রদর্শিত হচ্ছে। স্টলটি নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ’। এ কারণে প্রকাশনীটির স্টল বন্ধ করা হয়েছে।”