ঢাকায় নারী কাউন্সিলরের ‌‘ছত্রছায়ায়’ ব্যবসায়ীকে কোপানোর অভিযোগ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা ইতির ‘ছত্রছায়ায়’ এক ব্যবসায়ীকে কোপানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2016, 10:30 AM
Updated : 10 Feb 2016, 10:30 AM

বুধবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।

নির্মাণ ব্যবসায়ী বাবলু মিয়া বাবুল (৪৬) বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  

গত ২৪ জানুয়ারি রাজধানীর মনছুরাদে ১৫/২০ যুবক তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডের (সাধারণ ওয়ার্ড নম্বর ৯, ১০ ও ১১) নারী কাউন্সিলর ‘ইতির ছত্রছায়ায় চাঁদার দাবিতে’ তার স্বামী সোহরাব লোকজন নিয়ে এ ঘটনা ঘটায় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন বাবুলের স্ত্রী ও মেয়ে।

২৪ জানুয়ারির ঘটনার কয়েকদিন আগেও সোহরাব আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বাবুলকে এক জায়গায় নিয়ে মারধর করে এবং তার ব্যবহারের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন বাবুলের স্ত্রী রোকসানা বেগম।

তিনি বলেন, ২০ জানুয়ারি বাবুলকে মনছুরাবাদের নিজের নির্মাণাধীণ ভবনের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে দারুস সালাম থানাধীন আমিনুল ডাক্তারের বাড়ি সামনে নিয়ে আসে সোহরাব, রাসেল, রুবেল ও হাবিবুর রহমানসহ ১৫/২০ জন। ওইখানে তার স্বামীকে মারধর করে বাবুলের ব্যবহার করা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় দারুস সালাম থানায় একটি মামলা করা হয় জানিয়ে রোকসানা বলেন, “এ ঘটনার চারদিন পর ২৪ জানুয়ারি মনছুরাদে আমার স্বামীর নির্মাণাধীর ভবনে গোলমাল হচ্ছে- এমন খবর আসে।

“তখন আমার স্বামী বাবুল দারুস সালামের বাসা থেকে মনুছুরাবাদে গেলে সেখানে ১৫ থেকে ২০ জন যুবক এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত ভেবে রেখে চলে যায়।”

পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান রোকসানা।

বাবুল দারুস সালাম থানা স্বেচ্চাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক জানিয়ে সম্মেলনে তার মেয়ে আফসানা মিমি স্বপ্না বলেন, ইতির ছত্রছায়ায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়া এবং ২০ জানুয়ারির ঘটনায় মামলা করায় তার স্বামীর লোকজন তার বাবাকে কুপিয়েছে।

“এখনও তারা নানাভাবে আমাদের হুমকি দিচ্ছে।,” অভিযোগ করেন তিনি।

অবশ্য এই চাঁদার অভিযোগ অস্বীকার করেন কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা ইতি।

বাবুলের স্ত্রী রোকসানা তার স্বামী সোহরারের চাচাতো বোন জানিয়ে ইতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবুল আমার স্বামীর চাচাতো বোনের স্বামী। বিষয়টি পারিবারিক; এখানে কোনো চাঁদার ঘটনা ঘটেনি।”

ব্যবসায়ী বাবুল নিজেই তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে তার স্বামীকে ফাঁসাতে চাইছে বলে দাবি করেন এই নারী কাউন্সিলর।

ইতি বলেন, ‍“সেই দিন (২০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে আমি আমার স্বামী সোহরাবকে বাবুলের কাছে পাঠিয়েছিলাম আমার সঙ্গে দেখা করতে বলার জন্য। বাবুল তখন আমার স্বামীর সামনে আমাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয়।

“এ সময় সোহরাব বাবুলকে দুটি চড় মেরেছে। চড় মারায় বাবুল নিজের মোটরসাইকেল নিজেই জ্বালিয়ে আমার স্বামীকে ফাঁসাতে চেয়েছে।”

২৪ তারিখের ঘটনার সঙ্গে সোহরাব জড়িত ছিল না বলে দাবি করেন ঢাকা উত্তরের সংরক্ষিত এই নারী কাউন্সিলর।

কি কারণে দেখা করতে বলার জন্য স্বামী সোহরাবকে বাবুলের কাছে পাঠিয়েছিলেন জানতে চাইলে ইতি বলেন, “আমি একজন কাউন্সিলর আর সম্পর্কে বাবুলের ভাবী। একজন কাউন্সিলর হিসেবে দেখা করতে বলা কি অন্যায়, বলুন।”