রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ফের লংমার্চ

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে সারাদেশ থেকে সুন্দরবনে ফের লংমার্চ নিয়ে যাবে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2016, 07:34 AM
Updated : 6 Feb 2016, 07:40 AM

আগামী ১০ থেকে ১৫ মার্চ এই লংমার্চ হবে বলে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক আনু মুহাম্মদ।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে এই সাংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির রুহিন হোসেন প্রিন্স ও গণসংহতির আহবায়ক জোনায়েদ সাকী উপস্থিত ছিলেন।

তিনবছর আগে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে একই দাবিতে সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চ করেছিল তেলগ্যাস কমিটি।

লিখিত বক্তব্যে আনু মুহাম্মদ বলেন, “লংমার্চের আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার সারা দেশে প্রতিবাদ ও দাবি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

“এছাড়া ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা হবে।”

সরকার বাগেরহাটের রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ২০১১ সালে সমঝোতা স্মারকের পর ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে।

এই কেন্দ্রের নাম দেয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড’, যার সমান অংশীদার থাকছে দুই দেশের। 

তেলগ্যাস কমিটির সঙ্গে পরিবেশবিদ ও রামপালের বাসিন্দারা বলছেন, কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সুন্দরবন হুমকির মুখে পড়বে।

তবে সরকার শুরু থেকেই বলছে, পরিবেশ দূষণ ও প্রতিবেশ যাতে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে সর্তক থেকেই এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, “আমরা বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে লিখিত ও আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বলেছি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কেন বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর। বাংলাদেশ-ভারতের এ যৌথ প্রকল্পটি অস্বচ্ছ ও অসম।

“সুন্দরবন প্রাকৃতিক বর্ম হিসেবে বাংলদেশের মানুষ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করছে। এটি জীব বৈচিত্রের আধার হিসেবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে।”

তিনি বলেন, “ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি নিজ দেশের আইন ভঙ্গ করে এ প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাফারজোন বিবেচনায় চার কিলোমিটারের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

“এনটিসিপি ভারতে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারত না। ভারতে ইআইএ গাইডলাইন ২০১০ অনুসারে বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না। এমনকি ভারতে পরিবেশ আইন অনুসারে এনটিপিসির একাধিক প্রকল্প বাতিল করতে হয়েছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সর্বশেষ প্রযুক্তি ‘সুপার ক্রিটিক্যাল’ ব্যবহার করেও মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষতি কমানো সম্ভব হবে।

সংবাদ সম্মেলনে গ্যাসের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের পাশাপাশি এলপিজির মূল্য সমন্বয় এবং এজন্য সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।