বিভিন্ন স্থানের গোলযোগকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ উল্লেখ করে এবারের পৌর নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
Published : 30 Dec 2015, 08:11 PM
বুধবার দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে গণনা চলার মধ্যে সন্ধ্যার পর শেরে বাংলা নগরে ইসি সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “দেশের ইতিহাসে প্রথমবার দলীয়ভাবে পৌর ভোট হওয়ায় ভোটারদের বেশ আগ্রহ ছিল।
“মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ হয়েছে।”
বিক্ষিপ্ত গোলযোগ এবং জালভোটের অভিযোগের মধ্যে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৩৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে।
সিইসি জানান, অনিয়ম ও নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের জন্য নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভায় ভোট (১২ কেন্দ্র) স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৮টি পৌরসভার ৩৮টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
বরুড়ার একটি, চন্দনাইশের তিনটি, কালকিনির দুটি, ভালুকার একটি, চৌমুহনীর ১০টি, জামালপুরের তিনটি, কালিয়ার একটি, কুয়াকাটার একটি, সরিষাবাড়ীর একটি, নগরকান্দার একটি, উলিপুর দুটি, মতলবে একটি, শরীয়তপুরে একটি, বরগুনায় একটি, বেতাগীতে একটি, সৈয়দপুরে চারটি, ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি, যশোর একটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রয়েছে।
এসব স্থানে পুনঃভোট হবে বলে জানান সিইসি।
ভোটের হার জানতে চাইলে কাজী রকিব বলেন, “গণনা শেষ হওয়ার পর কত ভোট পড়েছে তা জানা যাবে। অনেক এলাকায় খুব ভালো ভোট পড়েছে। আবার কোথাও কোথাও কম ভোট পড়েছে।”
বর্তমান ইসির অধীনে অনুষ্ঠিত আগের নির্বাচনগুলোর তুলনায় এবার সহিংসতা-গোলযোগ কম হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আপনারাই তো কোথায় যেন বলেছেন- আগের চেয়ে কম সহিংসতা হয়েছে।”
এই ভোট নিয়ে সন্তুষ্টির বিষয়ে সরাসরি বলতে নারাজ সিইসি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে স্মিত মুখে তিনি বলেন, “সন্তুষ্টির বিষয়টি আপেক্ষিক বিষয়। ইটস মাই জব- উই আর ডুয়িং ইট। আমরা যা করছি, সুষ্ঠুভাবে আর ভালোভাবে করব। এর মূল্যায়ন আপনারাই করবেন।”
“সকলের সহায়তা নিয়েই একটা মহাযজ্ঞ করতে হয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলাফল এটা।”
সিইসির সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ, ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান ও যুগ্মসচিব জেসমিন টুলী ছিলেন।
‘বিএনপির অভিযোগ আমলে নিয়েছি’
দলভিত্তিক পৌর ভোটের তফসিল ঘোষণার পর থেকে অনিয়ম রোধের বিষয়ে সতর্ক ও কঠোর ছিলেন বলে দাবি করেছেন কাজী রকিব।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই যথেষ্ট সতর্ক ছিল, যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম না হয়।”
দায়িত্বে অবহেলার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে প্রত্যাহারের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
“বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও বিভিন্ন মাধ্যমের অভিযোগ আমলে নিয়ে তা ভেরিফাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
২০০টি পৌরসভায় অনিয়ম হয়েছে বলে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, “আমরা ৬০টি কেন্দ্রে অনিয়মের কথা শুনেছি।
“বেশিরভাগ অভিযোগ বিএনপির কাছ থেকেই এসেছে। নির্বাচন কর্মকর্তার কাছ থেকেও শুনেছি। যাচাই-বাছাই করে আমলে নিয়ে বেশ কিছু কেন্দ্রের ভোট বাতিল করেছি, সেখানে আবার ভোট নেওয়া হবে।”