ফাঁসি কার্যকর হলে হত্যা বন্ধ হবে: ইমরান

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি ঠেকাতে দেশে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে মন্তব্য করে ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে এসব হত্যাকাণ্ডও বন্ধ হয়ে যাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2015, 03:38 PM
Updated : 13 Nov 2015, 03:38 PM

রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একাত্তরের এই দুই মানবতাবিরোধী অপরাধীর দণ্ড কার্যকরে আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াত ইসলামী ও তাদের সহযোগীদের দিকে অভিযোগ তুলে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান বলেন, “আগে যে হত্যাকাণ্ড রাজপথে ছিল, প্রেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ হত্যার মহোৎসব শুরু হয়েছিল, সেটা হঠাৎ করেই গুপ্তহত্যায় মোড় নিয়েছে।

“তাই আজকে এক এক করে পুলিশ হত্যা, প্রকাশক হত্যা, বিদেশি হত্যা; সাম্প্রতিক এই সকল হত্যাকাণ্ডের পেছনে জামায়াতে ইসলামীসহ যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী রয়েছে-সেটা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।”

ইমরান এইচ সরকার বলেন. “যুদ্ধাপরাধের বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে এ সকল হত্যাকাণ্ড ঘটছে। যদি সাকা চোধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয় তবে এসব হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে।”

সরকারের এখন ‘তামাশা’ দেখার সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “শুধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয়, তাদের সম্পদও বাজেয়াপ্ত করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের পরিবার অঢেল অর্থ কোথায় ব্যয় করছে সেটা শক্তভাবে নজরদারি করা দরকার।”

প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা এবং শুদ্ধস্বর প্রকাশনীতে হামলা চালিয়ে তিন প্রকাশক-লেখককে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে এক সমাবেশে এসব বলেন ইমরান।

গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ বিকাল ৪টায় শুরু হয়। প্রতিবাদী সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। কবিতা আবৃত্তি করেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মিথুন আহমেদ।

উদীচীর সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সন্ধ্যায় শাহবাগে আলোক প্রজ্জ্বলন করেন গণজাগরণ কর্মীরা।

যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে ‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে সরকারের ভূমিকা প্রত্যাশা করেন ইমরান এইচ সরকার।

তিনি বলেন, “মৌলবাদী-জঙ্গিরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তারা এদেশকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হতে দেবে না, সংস্কৃতির চর্চা করতে দেবে না, নারীদের ঘর থেকে বের হতে দেবে না, তারা এদেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখতে দেবে না, কাজ করতে দেবে না, তারা এ দেশের অগ্রযাত্রাকে রুখে দিয়ে মধ্যযুগীয় শাসন কায়েম করতে চায়।”

মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ইমরান বলেন, তাদের ‘আস্ফালন ও বিস্তার’ রুখে দিতে দেশের গ্রামে-গঞ্জে বাংলা সংস্কৃতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।

সমাবেশে সঙ্গীত শিল্পী সায়ান বলেন, “সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা অনেকগুলো শক্তির কাছে জিম্মি হয়ে আছি। সরকারি দল, বিরোধী দল, জঙ্গি গোষ্ঠী-এমন নানা শক্তির কাছে আমাদের হাত পা বাঁধা।

“তবে বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার হওয়ায় এ সরকারের প্রতি আমাদের প্রত্যাশাটা সবচেয়ে বেশি। আমাদের আশা, আমরা সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করব।”