আত্মসমর্পণের পর ক্রিকেটার শাহাদাত কারাগারে

শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় স্ত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2015, 06:34 AM
Updated : 5 Oct 2015, 06:34 AM

সোমবার সকালে তিনি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক ইউসুফ হোসেন জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

এর  আগে রোববার ভোররাতে ঢাকার মালিবাগের একটি বাসা থেকে শাহাদাতের স্ত্রী জেসমিন আক্তার নিত্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুর রহমান তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে নিত্যকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শাহাদাতের জামিন আবেদনের শুনানিতে তার আইনজীবী কাজী নজিবুল্যাহ হিরু বলেন, “শাহাদাত গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের কোনো বিষয়ই জানতেন না। তিনি ব্যস্ত ছিলেন খেলা নিয়ে। চিকিৎসককের পরামর্শে তাদের নয় মাসের শিশুকে সুজি খাওয়ানো হত। সুজি বানাত ওই পরিচারিকা।

“একদিন সুজি খাওয়ানোর সময় তাদের বাচ্চাটি কেঁদে ওঠে। দেখা যায় সুজির স্বাদ ঝাল, রঙও আলাদা। অর্থাৎ, মরিচের গুঁড়ো নাড়ানোর কাঠি দিয়ে সুজি নাড়া হয়েছে। আসলে শাহাদাতের স্ত্রীর কাজ শাহাদাতের উপর বর্তে গেল।”

শাহাদাত কারাগারে থাকলে তার ‘ক্যারিয়ার’ শেষ হয়ে যাবে, দেশের ‘ক্ষতি হবে’, এই যুক্তি দেখিয়ে জামিন চান তিনি।

শাহাদাতকে কেন জামিন দেওয়া উচিৎ- সেই যুক্ত দেখাতে গিয়ে ইতালীয় ফুটবলার পাওলো রসিওকে আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক বলেন নজিবুল্যাহ হিরু।

“ব্যক্তিগত জীবনে আমি অনেকদিন ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি দেখেছি, মারাদোনার উত্থানের আগে একবার পাওলো রসিও আর্জেন্টিনার টিম লিডার হয়ে খেলতে নামে বিশ্বকাপ। যদিও তখন রসিওর নামে মামলা ছিল। রসিও বিশ্বকাপে একবার গোল্ডেন বুটও পায়।

</div>  </p><p>“একজনকে ঘুষি মারার দায়ে ভারতের ক্রিকেটার নবজিৎ সিং সিধুকে কারাভোগ করতে হয়। তারপরও তাকে দলে রাখে ভারত, মাঠে নামায়।”</p><p>অন্যদিকে জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি দেন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন।</p><p>এছাড়া বাদী ও নির্যাতিত শিশুর পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন দুটি মানবাধিকার সংগঠনের আইনজীবীরা।</p><p>শুনানি শেষে মহানগর হাকিম ইউসুফ হোসেন আদেশে বলেন, “আসামির সামাজিক মর্যাদা, মামলার পর্যায়, অভিযোগের গুরুত্ব ও ‘ভিকটিমের’ জবানবন্দি পর্যালোচনার করে জামিন নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হল।”</p><p>গত ৬ সেপ্টেম্বর গৃহকর্মী হারিয়ে গেছে জানিয়ে শাহাদাত থানায় সাধারণ ডায়েরি করার কয়েক ঘণ্টা পর ওই শিশুকে পাওয়া যায়।</p><p>পল্লবীর সাংবাদিক কলোনি থেকে ১১ বছর বয়সী ওই শিশুকে পেয়ে তাকে থানায় নিয়ে যান খন্দকার মোজাম্মেলক হক নামের এক সাংবাদিক।   </p><p>পরে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়। সাংবাদিকদের কাছে শাহাদাতের বাসায় নির্যাতিত হওয়ার বিবরণ দেয় শিশুটি।</p><p>সাংবাদিক মোজাম্মেল এ ঘটনায় মামলা করলে নিরুদ্দেশ হন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার ও তার স্ত্রী।</p><p>নির্যাতনের যে বর্ণনা ওই শিশু <a href="http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article1030041.bdnews">আদালতের জবানবন্দিতে</a> দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, শাহাদাত রুটি বানানোর বেলন দিয়ে তাকে পিটিয়ে পরে আবার আঘাতের স্থানে বরফ লাগাতেন।</p><p>চোখের উপর অংশে বেশ কয়েকবার বেলন দিয়ে পেটানো হয়েছে বলেও আদালতকে জানিয়েছে মেয়েটি।</p><p>গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় শাহাদাতকে জাতীয় দল থেকে <a href="http://bangla.bdnews24.com/cricket/article1026014.bdnews">সাময়িকভাবে বহিষ্কার</a> করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। আগামী ১২ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন <a href="http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article1023168.bdnews">আদালতে জমা দেওয়ার</a> কথা রয়েছে।</p>