প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার পর এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করছে। দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও সেখানে উপস্থিত রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক সফরের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য দেন।
এরই মধ্যে এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “আমি বেশি বলে সময় নষ্ট করতে চাই না। লিখিত দেওয়া আছে পড়ে নেবেন। আমি জানি অনেক প্রশ্ন অপেক্ষা করছে।”
জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। লন্ডন হয়ে শনিবার দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।
এরই মধ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলশানে ইতালীয় এনজিওকর্মী চেজারে তাভেল্লাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আর শনিবার সকালে রংপুরে একই কায়দায় খুন হন জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক উগ্রপন্থি দল আইএস দুটি হত্যাকাণ্ডেরই দায় স্বীকার করেছে বলে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ’-এর খবর।
তবে এর সঙ্গে আইএস-এর সংশ্লিষ্টতা আছে বলে মনে করেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তার সন্দেহ, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ‘অস্থিতিশীলতা তৈরির ষড়যন্ত্র’ রয়েছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। তিনি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের এক হওয়ার আহবান জানান।
এই সফরে তিনি ‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ ও ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ গ্রহণ করেন।
আইটিইউ’র ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২৬ সেপ্টেম্বর সংস্থার মহাসচিব হাউলিন ঝাও শেখ হাসিনার হাতে ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ তুলে দেন।
তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা (আইটিইউ) বাংলাদেশকে এ পুরস্কারে ভূষিত করে।
পরদিন ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়নস অফ দি আর্থ’ পুরস্কার গ্রহণ করেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক অ্যাচিম স্টেইনার নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তিরক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক আরও একটি আলোচনার উদ্বোধনী অধিবেশনেও কো-চেয়ার হন প্রধানমন্ত্রী। ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ অধিবেশনে ‘মেধাস্বত্ব আইন’ পর্যালোচনার আহ্বান জানান তিনি।
একইদিন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সম্মেলন কেন্দ্রে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ে এক গোলটেবিল আলোচনাতেও অংশ নেন।
২৭ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের এক বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। ২৯ সেপ্টেম্বর এমডিজি ও এসডিজি বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায়ও বক্তব্য রাখেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন।
সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।