সিম পুনঃনিবন্ধন রোববার শুরু

সঠিকভাবে নিবন্ধন করা মোবাইল সিম যাচাইয়ের সুযোগ রেখে আগামী রোববার থেকে সিম পুনঃনিবন্ধনে শুরু হচ্ছে তিন মাসের কার্যক্রম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2015, 07:41 AM
Updated : 11 Sept 2015, 08:39 AM

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানিয়েছেন, যারা ইতোমধ্যে সঠিকভাবে সিম নিবন্ধন করছেন, এ কার্যক্রমে তাদের সিম যাচাই করে নিতে হবে।

আর যাচাইয়ে যাদের নিবন্ধন সঠিকভাবে হয়নি বলে দেখা যাবে, তাদের সিম পুনঃনিবন্ধন করাতে হবে।

বুধবার সচিবালয়ে টেলিকম খাতের প্রতিবেদকদের সংগঠন ‘টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক  বাংলাদেশ’ এর সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “গ্রাহকরা কীভাবে সিম যাচাই বা পুনঃনিবন্ধন করবেন, সেই প্রক্রিয়া আগামী রোববারের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।”

১৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে এই কার্যক্রম চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র বিদায়ী চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস অনুষ্ঠানে বলেন, মোবাইল সিম যাতে অনলাইনে ভেরিফিকেশন করা যায়, সেই প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।

এ লক্ষ্যে অপারেটরগুলোকে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সার্ভারে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই সার্ভারের একটি লুপ বিটিআরসিতেও থাকবে এবং বিটিআরসি চাইলে মনিটর করতে পারবে।”

এনআইডি সার্ভারে প্রবেশের সুযোগ পাওয়ার পর গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপসহ নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে বিটিআরসির বিদায়ী প্রধান জানান।

সুনীল কান্তি বলেন, “আমরা সিম বিক্রি বন্ধ করতে চাই না, জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম বরাবরের মতোই কেনা যাবে।”

নিবন্ধন ছাড়া সিম বা অবৈধ সিম শনাক্তে অপারেটররা ইতোমধ্যে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে বলেও বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান।

প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, তিনমাসে পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর নিবন্ধন ছাড়া ‘অবৈধ’ সিমের তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে।

যেসব সিম নিবন্ধনহীন থাকবে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিম সঠিকভাবে নিবন্ধন করে আবার সচল করা যাবে বলে জানান তিনি।

তারানা হালিম বলেন, সিম বিক্রির ক্ষেত্রে খুচরো বিক্রেতা ও পরিবেশকদের  ‘ভেরিফাই’ করতে অপারেটরদের একটি ‘ডেটাবেইজ’ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

“অবৈধভাবে সিম নিয়ে যারা সন্ত্রাসী কাজ করছে তাদের জন্য এই প্রক্রিয়া একটি সতর্কবার্তা। অবৈধ সিমের এ বিতর্ক আমরা শেষ করতে চাই।”

যারা ইতোমধ্যে সঠিকভাবে সিম নিবন্ধন করছেন, তারা হয়রানিতে পড়তে যাচ্ছেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বৃহত্তর স্বার্থে, ভবিষ্যতের স্বার্থে অর্থাৎ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অবৈধ ভিওআইপি বন্ধে জনগণ এ বিষয়ে সহযোগিতা করবে বলে মনে করি।”

২০১২ সালের ১১ অক্টোবর থেকে মোবাইল ফোন অপারেটররা ‘প্রি-একটিভ’ সিম (আগে থেকেই চালু) বিক্রি করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।

কেউ নিবন্ধনহীন সিম ব্যবহার করলে প্রতিটি সিমের জন্য অপারেটরকে ৫০ ডলার করে জরিমানা করারও সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে তিন বছরেও তা কার্যকর হয়নি।

বেশিরভাগ অপারেটর সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করছে না এবং অনেকক্ষেত্রে অনিবন্ধিত সিম বিক্রির দায় অপারেটরা খুচরো বিক্রেতাদের উপর চাপিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বিটিআরসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৮৭ লাখ।